শ্রীকৃষ্ণের হৃদপিণ্ড আজও জেগে দেশের এই বিখ্যাত মন্দিরে

পুরীধামের দারুদেব ভক্তদের কাছে দারুব্রহ্ম। প্রতি বারো বছর অন্তর দেহ বদল ঘটে তাঁর। নব কলেবর লাভ করেন শ্রী জগন্নাথ। প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় তাঁর। শ্রীদেবের হৃদয় রয়ে যায় একই। কারণ তাঁর হৃদয়েই আজও বাস করে শ্রীকৃষ্ণের হৃদয়। জগন্নাথের ব্রহ্মপদার্থ বিশ্বের বিস্ময়। মনে করা হয় এই ব্রহ্ম বস্তুই তাঁর আত্মা।

পুরীর মন্দিরের প্রাচীন রীতি অনুযায়ী কৃষ্ণা চতুর্দশীর মধ্য রাতে নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে চার প্রবীণ দৈতাপতি পাণ্ডা চোখ বেঁধে পুরনো অবয়বটি থেকে নতুন কলেবরের মধ্যে ‘ব্রহ্মবস্তু’ রেখে দেন পরম ভক্তি ভরে। তাঁদের হাতে থাকে আবরণ। যাতে ত্বকের স্পর্শ এড়ানো যায়। ভুলেও যদি এই ব্রহ্ম পদার্থের উপর নজর পড়ে, তাহলে তাঁর মৃত্যু অনিবার্য।

ব্রহ্মপদার্থ আসলে কী?

গান্ধারীর অভিশাপে যদুবংশ হওয়ার পর দ্বারকায় জেলেরুপী জরার বিষাক্ত তির পদতলে বিঁধে শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যু হয়। টনার পরেও কৃষ্ণের দেহে প্রাণ ছিল। কিন্তু আদেশানুসারে, কৃষ্ণের দেহ দান করেন পাণ্ডবরা। আগুনে পুরো শরীর ভষ্ম হলেও হৃত্‍পিণ্ড জ্বলন্ত অবস্থায় জ্বলতে থাকে। সচল ছিল তখনও। আকাশবাণী হয়- এ হৃদয় অদাহ্য। সৎকারের পর তাই জলে ভাসিয়ে দেওয়ায় কর্তব্য বলে স্থির করে সকলে। জলে পতিত হয়ে সেই হৃদয় লোহার টুকরোয় পরিনত হয়।

একবার সমুদ্রে স্নান করার সময় রাজা ইন্দ্রদ্যুমের হাতে এসে পড়ে সেই লোহার টুকরো। স্বপ্নাদেশে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে নির্দেশ দেন, মন্দিরে কাঠের দেব-দেবীর মূর্তি তৈরি করে এই নরম লোহার অংশ ব্রহ্ম পদার্থ হিসেবে স্থাপন করতে। সেই থেকে পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের মূর্তির মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় প্রতিষ্ঠা করা হয় এখনও।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...