সামনেই আসতে চলেছে বাঙালির প্রিয় উৎসব দূর্গা পুজো। বছর শেষ হতেও আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। দূর্গা পুজো দিয়ে আমাদের উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায়, যা শেষ হয় একেবারে সরস্বতী পুজোর পর। এর মধ্যেই নতুন বছরের শুরুতে বাঙালিদের কাছে গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে স্নান একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। সেখানে এতদিন কপিলমুনির আশ্রমে সকলে যেতেন পুণ্য অর্জনের জন্য, কিন্তু কপিলমুনির মন্দিরের সামনে তাঁর কোনও স্থায়ী মূর্তি নেই। কপিলমুনি মন্দির কমিটি অনেকদিন ধরেই চাইছিল তাঁর একটি স্থায়ী মূর্তি নির্মাণ করা হোক, সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এবার গঙ্গাসাগর মেলা শুরুর সময় সেই মূর্তি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মূর্তি তৈরির জন্য টেন্ডার ডেকে ওয়ার্ক অর্ডারের কাজও শুরু করে দিয়েছে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা শাসক পি উলগানাথন শুক্রবার সাগরমেলার সার্বিক কাজ কে, কীভাবে এবং কতদিনের মধ্যে শেষ করতে পারবে সেই ব্যাপারে আলিপুরে বৈঠক ডেকেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুন্দরবনের পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি। মেলার নতুন কাজ হিসেবেই এই মূর্তি তৈরির বিষয়টি আসে। গত বছর মেলার সময় মুখ্যমন্ত্রী মন্দিরের বাইরে দাল্লা সেন্টারের সামনে (ভগীরথের শঙ্খ বাজিয়ে গঙ্গা আনা) ম্যুরাল চিত্রের উদ্বোধন করেছিলেন। বৈঠকে আলোচনার সময় জেলাশাসকের প্রশ্নের উত্তরে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের একজিকিউটিভ অফিসার জয়ন্ত মন্ডল জানান, এবারেও কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। তখনই ফাইবার গ্লাসের কপিল মুনির মূর্তি বসানোর বিষয়টি তিনি সামনে আনেন। হাওড়ার একটি সংস্থাকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে সংলগ্ন এলাকার ছোট পুকুরটিতে নতুন করে স্থায়ী ফোয়ারা এবং তার সঙ্গে আলো দিয়ে সাজানো হচ্ছে। ৩ নং রাস্তার সামনে ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের শাস্ত্রীয় নৃত্য এবং লোকনৃত্যকে ম্যুরাল চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। জিবিডিএ পরীক্ষামূলকভাবে এবারে ৪টি ইউনিট তৈরী করে দেবে। এর বাইরে যদিও বিনা পয়সাতেও এই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। মেলাতে সাগরতটে স্নান করার জন্য বহু মানুষ উপস্থিত হন। এতদিন তাঁদের স্নানের সময় পোশাক পরিবর্তনের কোনো স্থায়ী জায়গা ছিলনা। এবারে সেখানে স্থায়ীভাবে ফাইবার দিয়ে ঝকঝকে ড্রেসিং চেঞ্জরুম তৈরী করা হচ্ছে। তবে এই চেঞ্জরুম ব্যবহার করতে হলে একটা ন্যূনতম চার্জ দিতে হবে।
সে যাই হোক, প্রতি বছরই নতুন করে সেজে উঠছে গঙ্গাসাগর অঞ্চল, তার ফলে শুধুমাত্র পুণ্যার্থী ছাড়াও যাঁরা ঘুরতে ভালোবাসেন, তাঁদেরও পছন্দের জায়গা রূপে সেজে উঠছে গঙ্গাসাগর।