মসলিনের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট রাজ্য

প্রবাদ ছিল একটা আংটির মধ্যে দিয়ে ঢুকিয়ে বের করানো যেত বাংলার মসলিনকে। ৫০ মিটার দীর্ঘ মসলিনের কাপড়কে একটি দেশলাই বাক্সে ভরে রাখা যেত। ইতিহাস বলছে বাংলার মসলিনের কদর মুঘল আমলে বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর থেকে মসলিনের খ্যাতি বেড়ে যায়। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী কোন কোন এলাকায় ফুটি নামে এক প্রকার তুলা জন্মাত। এর সুতো থেকে তৈরি হতো সবচেয়ে সূক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র। ইংরেজ আমলে মসলিন শিল্পের অবনতি ঘটতে ঘটতে একসময় বিলুপ্তির পথে চলে যায় । বাংলার বিস্মৃতপ্রায় মসলিনকে ফের বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।  পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় এখন তাঁতে বোনা হচ্ছে বাংলার মসলিন। ঐতিহ্যেবাহী এই বস্ত্র শিল্প আদতে যে বাংলারই সম্পদ তা সকলের সামনে তুলে ধরতে সচেষ্ট সরকার। সেই লক্ষ্যেই ওয়েস্ট বেঙ্গল খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রি বোর্ড ইতিমধ্যেই মসলিনের জিআই-এর জন্য আবেদন করেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের যে নিয়ম রয়েছে তাতে বলা হয়েছে কোনও অঞ্চলের যদি নিজস্ব কোনো দ্রব্য বা পণ্য থাকে যা তাহযে সেটি জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জি আই তকমার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। অবিভক্ত বাংলাদেশের ঢাকায় যে শিল্পকর্মের প্রসিদ্ধি ঘটেছিলো তাতে এপার বাংলার অবদানই ছিল বৃহৎ। ইতিহাস ও নথি ঘেঁটে সেই সব তথ্য সংগ্রহের কাজ ও গবেষণার পথে এগিয়েছে রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর| ওয়েস্ট বেঙ্গল খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রি বোর্ড-এর তরফ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে এ রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় তাঁতিরা মসলিন ক্লাস্টারে মসলিন বস্ত্র তৈরী করছেন। বাঁকুড়া, বীরভূম, হাওড়া, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, কালিম্পং, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে মোট ৬৩টি মসলিন ক্লাস্টার। আঞ্চলিক বাজারে বিপণনের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় এই বিপণন করা হচ্ছে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...