ঝাঁ-চকচকে একটা বিশাল হলঘর। খেলার সরঞ্জামে পরিপূর্ণ। এছাড়াও রয়েছেন পেলে, ক্রিকেট-সম্রাট শচীন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, টেনিসের জাদুকর রজার ফেডেরার।
অবাক লাগছে? এতগুলো স্বপ্নমানুষ একসঙ্গে! এমনও হয় নাকি!
নিউটাউনের ইকো স্পেসের কলকাতার খেলার জাদুঘর এমনই।
খেলার নানা সরঞ্জাম, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সাজানো কলকাতার একমাত্র ক্রীড়া-জাদুঘর।
ঠিকানা ইকোস্পেস, দ্বিতীয় সেক্টর, নিউ টাউন, কলকাতা-১৫৬।
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের একমাত্র ক্রীড়া জাদুঘর এটি।
তবে একেও ব্যক্তিগত জাদুঘরই বলা চলে। ক্রীড়া-বিশেষজ্ঞ বোরিয়া মজুমদার এবং বিখ্যাত ব্যবসায়ী হর্ষবর্ধন নেওটিয়া এই জাদুঘরটি প্রথম স্থাপন করেন।
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে এই জাদুঘরটির গোড়াপত্তন করা হয় ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য।
তবে ক্রীড়া গবেষক বা বিশেষজ্ঞরাও এখানে আসেন নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে।
ক্রীড়াজগতের নক্ষত্রদের ব্যবহৃত নানা ঐতিহ্যবাহী জিনিসের সম্ভার এই জাদুঘর।
সোমবার বাদে বাকি ছ'দিন সকাল এগারোটা থেকে সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে এই জাদুঘর।
প্রবেশ মূল্য একশো টাকা। গবেষণার প্রয়োজনে ছবি তোলা যেতে পারে।
৩৭০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে একটুকরো খেলার পৃথিবী সেজে উঠেছে এই জাদুঘরে।
ক্রীড়া সাংবাদিক বোরিয়া মজুমদার তাঁর জীবনে উনত্রিশ বছর ধরে খেলার জগতের সঙ্গে যুক্ত থেকে যে সমস্ত জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছেন তাঁর সেই ব্যক্তিগত সংগ্রহ এই জাদুঘর আলো করে রয়েছে।
বর্তমানে এই জাদুঘরে প্রায় ১৩৩ রকম নথি, ৬০ রকম বিশেষ সাজসজ্জা এবং ক্রীড়াজগতের ১৫ জন মানুষের কাট-আউট রাখা রয়েছে।
২০১২ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রিকেটের জাদুকর শচীন তেন্ডুলকর তাঁর জীবনের শততম সেঞ্চুরি করেছিলেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। সেই স্বপ্ন-মানুষের সেদিনের হাতের গ্লাভস ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হলে এই জাদুঘরই একমাত্র ঠিকানা।
এই জাদুঘর ক্রীড়া ইতিহাসের মণিমুক্তোয় পরিপূর্ণ। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকসে পি ভি সিন্ধুর জার্সি, বিখ্যাত খেলোয়াড় অভিনব বিন্দ্রার গ্লাভস যেটি তিনি ২০০৮ সালের অলিম্পিকসে ব্যবহার করেছিলেন , মেরি কমের জার্সি, এছাড়াও ক্রীড়া ইতিহাসের নানা রত্ন ছড়িয়ে রয়েছে এই জাদুঘরে।
ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে এই জাদুঘর স্বপ্ন-ভ্রমণের মত। এখনো পর্যন্ত খেলার ইতিহাসে তৈরি হওয়া রেকর্ডগুলোর প্রমাণ রয়েছে এই জাদুঘরে।
এইসব রত্নকে ছুঁয়ে দেখতে হলে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছতেই হবে পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র এই ক্রীড়া-জাদুঘরে।