বিদ্যুৎ খাতে খরচ বাঁচাতে আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করতে চলেছে নিকোপার্কস অ্যান্ড রিসোর্স লিমিটেড। বছরে ৮০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে বিদ্যুৎ খাতে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ রক্ষার্থে ৪০০ কিলোওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আসার পরিকল্পনায় রয়েছে নিকোপার্ক কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি স্পষ্ট করতে গিয়ে নিকোপার্ক ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও অভিজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, “আমাদের কানেক্টিং লোড ১ মেগাওয়াট। এর ১০ শতাংশ বা ১০০ কিলোওয়াট আমরা সোলার প্যানেল থেকে পাব। মোট ৩৬৬টি প্যানেল বসাতে ৬০ লক্ষ টাকা আমরা লগ্নি করছি। টাটা পাওয়ার টার্ন কি ভিত্তিতে প্রকল্পটি গড়ে তুলছে। পে ব্যাক পিরিয়ড তিন থেকে চার বছর। তার পর প্রতি বছর আমরা বছরে অন্তত ২০ লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল বাবদ খরচ বাঁচাতে পারব”|
রাজ্য সরকার ও নিকোপার্ক কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ১৯৯১ সালে প্রথম চালু হয় নিকো পার্ক। গত মরশুমে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা আয় করেছে পূর্ব ভারতের বৃহত্তম এই বিনোদন পার্ক। নিট মুনাফার অর্থাঙ্ক ১১ কোটি টাকা। চলতি বছরে এর ১০ শতাংশ আয় বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে এই সংস্থা। আগামী চার বছরের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এই হার অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন নিকোপার্ক কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, “আমরা ভারতের প্রথম বিনোদন পার্ক যারা চালু হওয়ার প্রথম বছর থেকে মুনাফা করছে। যে সমস্ত রাইড আমাদের কাছে রয়েছে, আপাতত সে সবের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। তাই খরচ কমিয়ে মুনাফা বাড়ানোর লক্ষ্যে সৌরপ্রকল্প এক বিরাট ভূমিকা নেবে। তিন থেকে চার বছরে আমরা যদি আমাদের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ নিজেদের সোলার প্যানেল থেকে পাই, সে ক্ষেত্রে এখনকার ইউনিট প্রতি দামে বছরে ৮০ লক্ষ টাকা খরচ বিদ্যুৎ খাতে কমানো সম্ভব হবে।“
ভারতের ১০,০০০ কোটি টাকার বিনোদন পার্কের বাজারে নিকোপার্ক দেশের প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছে বলে সংস্থার দাবি। গত ২০ বছরে ২০টি বিনোদন পার্ক ও ৫টি ওয়াটার পার্ক তাঁরা গড়ে তুলেছেন। তার মধ্যে বাংলাদেশের ঢাকা ও জামশেদপুরের দুটি পার্কের মালিকানাও রয়েছে তাদের হাতে। ব্যবসা বৃদ্ধি করতে টার্ন কি ভিত্তিতে বিনোদন পার্ক গড়ে তোলা ও কনসালট্যান্সি পরিসরে নজর রাখছেন তারা।
সংস্থার আশা, প্রাথমিক পর্যায়ে নভেম্বরের মধ্যে ১১৫ কিলোওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হয়ে যাবে বিধাননগরের নিকো পার্কে। প্রকল্পটি যথাযথ রূপ পেতে শুরু করলে আগামী চার বছরে নিকোপার্কের মধ্যেই সৌরবিদ্যুৎ চারগুণ বাড়িয়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নিকোপার্ক কর্তৃপক্ষ।