গ্যাস সিলিন্ডার ডিলারদের পরিষেবা যাচাই

আমাদের বাড়ির রান্নার গ্যাস একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। একদিনও গ্যাস ছাড়া আমাদের চলতে পারেনা। যত দিন যাচ্ছে, ততই গ্যাসের দাম বাড়ছে। ভর্তুকিহীন বা ভর্তুকিযুক্ত যাই বলুননা কেন, গ্যাসের চাহিদা অনুযায়ী তার দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দিনকে দিন। এছাড়াও রয়েছে ডিলারদের একাধিপত্য। গ্যাস বুক করার পরে সময়মতো ডেলিভারি না হওয়া, যা দাম, তার চেয়ে কিছু বেশি নেওয়া এ সব তো আছেই। সেই দিন শেষ হতে চলেছে।

অতি সম্প্রতি গ্যাস বুকিং-এর সময় গ্রাহকরা যে এসএমএস পাচ্ছেন, সেখানেই পরিষেবা সংক্রান্ত 'ফিডব্যাক' দেওয়ার সুযোগ থাকছে। গ্রাহকরা কেমন পরিষেবা পাচ্ছেন, তাই বলতে হবে সেই ফিডব্যাক-এ। মূলতঃ সেখানে জানতে চাওয়া হচ্ছে মোট চারটি তথ্য। ১)সিলিন্ডারের সিল ঠিক আছে কি না, ২)সিলিন্ডারের লিকেজ চেক করে দেওয়া হচ্ছে কি না, ৩)সিলিন্ডারের ওজন মেপে দেওয়া হচ্ছে কি না, ৪)সিলিন্ডারের দাম শুধুমাত্র ক্যাশমেমোতে যা লেখা আছে, সেই মতোই নেওয়া হচ্ছে কি না। তার পাশাপাশি গ্যাসের ডিলারকে রেটিং করার সুযোগও থাকছে। ডিলার কত দিনে গ্যাস সাপ্লাই করছেন তার সব হিসেব থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থাগুলির কাছে। সেই মত রেটিং হয় ডিলারদের। বুকিং-এর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিলিন্ডার ডেলিভারি হলে ফাইভ স্টার রেটিং পাওয়া যায়। যত দেরি করে ডেলিভারি হয়, ততই রেটিং কমে। দুই বা একটি স্টার পেলে সেই ডিলারের খারাপ পরিষেবা বলে বিবেচিত হয়। যদি দেখা যায়, অভিযোগ বাড়ছে, তাহলে শাস্তিও হতে পারে উক্ত ডিলারের। বছরের মধ্যে ছ'মাস যদি ডিলারদের রেকর্ড খারাপ থাকে, তাহলে নগদ দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে সেই ডিলারের বিরুদ্ধে। এই নিয়ম বাইরের রাজ্যগুলিতে চালু হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও শুরু হয়নি। এখানকার কোনো ডিলারই শাস্তির কোপে পড়েননি। তবে এবার থেকে এখানেও এই নিয়ম চালু করতে চায় তেল সংস্থাগুলি। সাধারণ মানুষ এখন তাকিয়ে রয়েছে, গ্রাহক পরিষেবায় এই ব্যবস্থা কতটা কাজ করে তা দেখার জন্য।

   ইন্ডিয়ান অয়েলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ দে জানান, সিলিন্ডার ডেলিভারির ক্ষেত্রে যদি দেরি হয়, তাহলে ডিলাররা শাস্তি পেতে পারেন। কিন্তু ডেলিভারি ছাড়াও ডিলারের তরফে আরও কয়েকটি পরিষেবা দেওয়ার কথা গ্রাহককে। তার মধ্যে যেমন আছে সিলিন্ডার মেপে দেওয়া তার পাশাপাশি আছে সিলিন্ডারের সিল বা লিক চেক করে দেওয়া। তিনি জানান, তাঁদের সংস্থা এই বিষয়গুলির ওপর জোর দিতে চান। গ্রাহকরা আদৌ সেই পরিষেবা পাচ্ছেন কি না তা জানতেই সার্ভে করা হচ্ছে। পরিষেবায় গাফিলতি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দেওয়া হবে না তাদের। প্রথমে সেই বিষয়ে সজাগ করা হবে। কিন্তু তার পরেও যদি ডিলাররা না শুধরোয় তবে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। অবধারিতভাবেই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলির এই পদক্ষেপে একেবারেই সন্তুষ্ট নন ডিলাররা। তারা তাদের মত করে যুক্তি সাজাচ্ছেন। কিন্তু আদপে কি হয়, সেটাই দেখার।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...