চৌচালা স্থাপত্য কলার নিদর্শন রমনা কালী মন্দির

ভারতীয় উপমহাদেশে বাঙালি হিন্দু স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন হল রমনা কালী মন্দির। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল এই মন্দিরের স্থাপত্য কলার সঙ্গে মিল রয়েছে মুসলিম স্থাপত্যের। বাংলার চৌচালা রীতি অনুসরণ করে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটির মাথার উপর একটি পিরামিড আকৃতির চূড়া দেখতে পাওয়া যেত। এই চূড়াটির উচ্চতা ছিল প্রায় ১২০ ফুট। ঐতিহাসিকদের ধারণা এই মন্দিরটি প্রায় তিন'শ বছর পূর্বে তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময় আদি শঙ্করাচার্যের অনুগামী সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেছিলেন।‌ তারপর ঐ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। 

কিন্তু ঐতিহ্যবাহী রমনা কালী প্রায় ধ্বংস হয়ে যায় একাত্তরের যুদ্ধের সময়। পাক হানাদারদের অভিযানে ধ্বংস করা হয়েছিল এই মন্দিরটিকে। তার ঢাকার রমনা নামক স্থানটিতে অবস্থিত এই মন্দিরটিতে উপাসনা করা হয় মা কালীর। 

 

Ramna1

 

স্থানীয় অঞ্চলের নাম থেকেই মন্দিরের নামকরণ। ঢাকা  জেলার সরকারি তথ্য অনুযায়ী,  নেপাল থেকে আসা এক কালীভক্ত মন্দিরটি নির্মাণ করেন। পরে ভাওয়ালের রানি বিলাসমণি দেবী এটি সংস্কার করেন।

শুধু বাংলাদেশের নয়, সমগ্ৰ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম হিন্দু মন্দিরগুলির মধ্যে নাম রয়েছে রমনা কালী মন্দিরের। সেই সময় ঐ স্থানে কালী মন্দির ছাড়াও একটি শিব, একটি নাট মন্দির ও একটি সিংহ দরওয়াজা ছিল। সেই সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতিকালে ভারত সরকারের তরফে এই মন্দিরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আবার মন্দিরটির ভবন সহ বেশ কিছু অংশ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।

মন্দিরটির উদ্বোধনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। চিরকাল বাংলাদেশে প্রাচীন হিন্দু সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নিদর্শন ধরে রাখবে রমনা কালী মন্দির।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...