আমাদের সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানোর সমস্ত ধকল মুখ বুজে সহ্য করে চলে আমাদের জুতোজোড়া। কিন্তু কখনো কখনো রাগের বহিঃপ্রকাশ তারা করেই ফেলে। যেমন ধরুন নতুন জুতো, তার কি আর ইচ্ছে করে শোরুম থেকে বেরিয়েই পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়াতে? রাগ হওয়া স্বাভাবিক। তার ফলাফল? ফোস্কা!
না, মোটেই এরকম কোনো ব্যাপার নেই। জুতো আমাদের উপর মোটেই রাগ করে না আর তার ফলস্বরূপ ফোস্কাও পড়ে না। ফোস্কা পড়ার পিছনে অন্য কারণ থাকে। জুতোর নতুন মেটিরিয়াল বারবার পায়ে ঘষা লাগার ফলে সেই জায়গায় ফোস্কা পড়ে। বারবার ঘষা লাগার ফলে সেই জায়গাটি অত্যন্ত গরম হয়ে যায় এবং সেই জায়গায় ফোস্কার সৃষ্টি করে থাকে। খেয়াল করলে দেখা যাবে, শীতকালের থেকে গরমকালে ফোস্কার সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। নতুন জুতো পায়ে দিয়ে পুজোর সময় বেরিয়ে পায়ে ফোস্কা পড়েনি এরকম মানুষ কিন্তু খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টকর। আর সে পুজোর সময়ই হোক বা সাধারণ সময় একবার পায়ে ফোস্কা পড়ে গেলে তার পরবর্তী কয়েকদিন হাঁটাচলা করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সামনেই পুজো। তাই এখন থেকেই জেনে নিন, কিভাবে ফোস্কার হাত থেকে বাঁচবেন আর কি করেই বা ফোস্কা পড়লে তা তাড়াতাড়ি কমাবেন.........
১) মধুর অ্যান্টিবায়োটিক গুণের জন্য চিকিৎসাবিদ্যায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই মধুই ফোস্কার ক্ষেত্রেও ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে। যেমন নতুন জুতো পড়ে পায়ে ফোস্কা পড়লে সেই স্থানে দিনে তিনবার করে মধু লাগিয়ে রাখলে ফোস্কা খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
২) আমরা সকলেই একসময় দেখেছি স্কুলের নতুন জুতো পরার আগে আমাদের মা আমাদের পায়ে নারকেল তেল লাগিয়ে দিতেন। আজ দিন বদলেছে, আমরা বড় হয়ে গেছি আর তার সাথে সাথে ভুলে গেছি মায়ের শেখানো সেই কথাটি যে নতুন জুতো পড়ার আগে পায়ে তেল মেখে নিলে ফোস্কা পড়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। সেই কথাটি যে কতটা সত্য তা নিজেই ট্রাই করে দেখুন।
৩) জুতোর চামড়া সবজায়গায় সমান বা মসৃন হয় না। বিশেষ করে পাম্পশু হলে আঙুলের জায়গাটি এবং গোড়ালির উপরে থাকা জুতোর অংশটিতে ভালো করে ভেসলিন জাতীয় জিনিস লাগিয়ে নিন। এতে জায়গাটি নরম হবে এবং ফোস্কা পড়বে না।
৪) গোড়ালির দিকের জুতোর অংশ বা বুড়ো আঙুলের কাছে থাকা জুতোর অংশ যদি মসৃন নয় বলে মনে হয় তাহলে সেই জায়গায় টেপ লাগিয়েও আপনি ব্যবহার করতে পারেন। টেপ লাগানো থাকলে সেই কম জায়গায় ঘষা লাগে আর ফোস্কা পড়ার অবকাশ থাকে না।
৫) পায়ের ফোস্কা সারানোর অনেক উপায় রয়েছে। যেমন ফোস্কা পড়া অংশটি সবসময় চাপা দিয়ে রাখা উচিত নয়। হাওয়া বাতাস যাতে সেই জায়গায় ভালো করে লাগে সেইদিকে খেয়াল রাখা উচিত। তবে ফোস্কাটি যদি সদ্য ফেটে গিয়ে থাকে তাহলে সেই জায়গা কিছুক্ষনের জন্য চাপা দিয়ে বা ব্যান্ডেড লাগিয়ে ঢেকে রাখা উচিত। খোলা জায়গায় ধুলোবালি লেগে হিতে বিপরীত হওয়ার আশংকা থাকে। তবে একদিন ব্যান্ডেড লাগিয়ে রেখে পরের দিন থেকে সেই জায়গা আর চাপা দিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই।
৬) সকলের বাড়িতেই প্রায় রাতে রুটি খাওয়ার চল রয়েছে। তাই সকলের বাড়িতেই আটা সবসময় মজুত থাকে। পায়ে ফোস্কা পড়লে একটু ঘন করে আটার ব্যাটার বানিয়ে সেটি সেই ফোস্কার জায়গায় লাগিয়ে রাখুন। ফোস্কা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
পুজো আসছে। আর মাত্র তিন মাস মতো বাকি। ইতিমধ্যেই অনেকে শপিং করতেও শুরু করে দিয়েছে। আর পুজো আসছে মানে নতুন জুতো তো কিনতেই হবে। নতুন জুতো পায়ে গলানো মানেই..... ফোস্কা। এই সমস্যায় যাতে না পড়তে হয় তার সমাধানই রইলো আপনাদের জন্য।