ক্যালাইডোস্কোপের মতো পিপলি গ্রাম

ক্যালাইডোস্কোপের মতো একটা গ্রাম। পা রাখলেই লাল-হলুদ-নীল-কমলার উচ্ছ্বাস সবাগত জানায় টুরিস্টদের।

গ্রামের রাস্তার ধারে ধারে ছোট বড় নানারকম দোকান চোখ টেনে নেয়। মেট্রো শহরের ঝাঁ-চকচকে চমক এখানে নেই, কিন্তু সহজ জীবন যাত্রার মিঠে টান মন ছুঁয়ে যাবেই।

ভুবনেশ্বর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে পিপলি গ্রাম।  ভৌগলিক দিক থেকে আ বললে ভুবনেশ্বর আর পুরীর ঠিক মাঝখানে। ২০৩ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে।

বিশ্বের মানচিত্রে এই গ্রামটি আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছে নিজেকে। এখানকার মানুষের সূচের যাদু মুগ্ধ করে রেখেছে সারা বিশ্বকে।

 পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন পিপলিতে। স্থানীয় পরিভাষায় পিপলিকে শিল্পকে বলা হয় ঝান্ডুইয়া।

প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ আছে পিপলির । শ্রী জগন্নাথের সজ্জায় অলংকরন করা হয় পিপলি দিয়ে।

পিপলি একেবারেই  র নিজস্ব শিল্প। ওড়িশার শিল্পচর্চার অন্যতম ‘সিগনেচার’ বললে বাড়াবাড়ি হবে না। ওড়িশায় পিপলি শিল্পের  শুরুয়াত কীভাবে হল তার কোনও বিশদ তথ্য পাওয়া যায় না, তবু মনে করা হয় সপ্তদশ শতকের শেষ বা অষ্টাদশ শতকে পিপলি শিল্প মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। জগন্নাথ মন্দিরে প্রভু জগন্নাথের শোভাযাত্রায় পিপলি শিল্পের নানা অনুসঙ্গ ব্যবহার করা হত। জগন্নাথের রথ সাজানো হয় পিপলি কাজ দিয়ে।

পোশাক তো বটেই ছাতা, ব্যাগ, লন্ঠন, কুশন কভার,  পিলো কভার- এ জনপ্রিয় পিপলি। 

উজ্জ্বল সুতির কাপড়ের টুকরোর ওপর পছন্দমতো মোটিভ এঁকে তা কেটে নেওয়া হয়। তারপর সেটিকে অন্য কাপড়ের ওপর বসিয়ে সেলাই করতে হয়।  থাকে ‘মিরর’ অর্থাৎ আয়নার কাজ।

বাখিয়া, টারোপা, ঘন্টি, চিকন, বাটন হোল এবং রাচিং- এই ছয় ধরনের পিপল ওয়ার্ক হয়ে থাকে।

 

পশু , পাখি এবং জগন্নাথ বিগ্রহকে ফুটিয়ে ৎোলা হয় পিপল৮ইর মাধ্যমে।
গ্রামে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ ঘর শিল্পীর বাস।

পিপলি শিল্পকে কেন্দ্র করে একাধিক স্বনির্ভর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫০০ জন মহিলা যুক্ত আছেন বিভিন্ন প্রকল্পে। তাঁদের
একটা বড় অংশ সূচি শিল্পী। অনেকে আবার পণ্যকে বাজার এবং ক্রেতাদের কাছাকছি পৌঁছে দেওয়ার কাজেও সরাসরি যুক্ত।

ওড়িশার এই গ্রাম শুধু ওড়িশার নয়, ভারতের ঐতিহ্য এবং  সংস্কৃতিকেও আগলে রেখেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...