শিপ্লের দেশ ফ্রান্স। বিশ্ববরেণ্য একাধিক শিল্পী তাদের শিল্পের ভাণ্ডারে সমৃদ্ধ করেছেন দেশটিকে। সাহিত্য, ইতিহাস, রোমান্স, শিল্প দেশটির ছত্রে ছত্রে সজ্জিত - কখন যে কে তার মধ্যেই এক একটির সন্ধান পাবেন তা জানা ভগবানেরও অসাধ্য। ঠিক যেমন রেস্তোরাঁর নীচে থেকে পাওয়া গেলো রোমান সভ্যতার অজানা তথ্য, যা এক বেনামি রেস্তোরাঁকে করে তুললো বিশ্বের একমাত্র রেঁস্তো - মিউজিয়াম। ঠিক সেভাবেই ত্রয়োদশ শতাব্দীর বিখ্যাত এক ছবির সন্ধান পাওয়া গেলো কম্পিয়াতে এক মহিলার রান্নাঘর থেকে। ছবিটির গুরুত্ত্ব না বুঝেই তিনি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন হটপ্লেসের উপরে। তিনি ওই বাড়ি বিক্রির পরিকল্পনা করেন এবং পুরোনো জিনিসের সাথে সেটিকেও বিক্রির জন্য উদ্যত হন। তার আনুমানিক দাম নির্ধারণে এক চিত্রশিল্পীকে ডাকা হলে শুরু হলো মহিলার ভাগ্য রেখার বদল। উনি দায়িত্ব নিয়ে অকশনের ব্যবস্থা করেন। আশ্চর্যের বিষয় ৭০০ বছরের পুরোনো ছবিটি একেবারে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। এক্কেবারে ঘোর বাস্তব।
রান্নাঘর থেকে পাওয়া মূল্যবান ছবিটি রেনেসাঁর সমকালীন ইতালিয়ান চিত্রশিল্পী সীমাবুর (সিনেনি ডি পেপো নামেও পরিচিত) আঁকা, তা বিক্রিও হলো অকশনে। মূল্য তাও যেকোনো সাধারণ মানুষের কাছে কল্পনাতীত -২৪ মিলিয়ন ইউরো। ফলে লটারির মতোই মহিলা কয়েক মিলিয়নের মালিক হলেন, যা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি।
আরো বিস্ময়কর এই প্রথম এই চিত্রশিল্পীর কোনো কীর্তির প্রথম অকশন হলো। তাঁকে ‘ইতালীয় রেনেসাঁর পূর্বপুরুষ’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তিনি মধ্যযুগে জনপ্রিয় বাইজান্টাইন রীতিটি ভেঙে পশ্চিম চিত্রকলার বৈশিষ্ট্য এবং দৃষ্টিভঙ্গির উপাদানগুলিকে একত্রিত করতে শুরু করেছিলেন। এই ছবির টাইটেল দিয়েছিলেন 'ক্রাইস্ট মকড', যা আকারে ১০/৮ ইঞ্চি।
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছসিত হয়েছেন শিল্পীমহল ও শিল্পের গুণগ্রাহীরা। ছবিটির বিশেষত্ব হলো আলো ও দূরত্বের উপর সীমাবুর দক্ষতা -যাতে আলোকপাত করেছেন স্টিফানা পিন্টা নামের এক চিত্র বিশেষজ্ঞ। তবে এই আশ্চর্য আবিষ্কার থেকে বলাই যাই কপাল কোন দিকে কাকে নিয়ে যায় তা কেউ বলতে পারে কি! তা সে বিজ্ঞান যতই উন্নত হোক না কেন ভবিতব্য নির্ধারণ তার পক্ষেও মুশকিল।