মিস্টার পারফেকশনিস্ট!

২০ মিনিটের সিনেমা। তার জন্য শুটিং হল ৪০ ফুটের। মানে ৪০ ফুট রিল খরচ করতে হলে। তখন রিল সিনেমার যুগ। ক্যামেরা আর সেলুলয়েড দুই ব্যয়বহুল ব্যাপার। কিন্তু তিনি নাছোড়। মনের মতো না হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকবে শট। ছবির নাম ‘দ্য ইমিগ্র্যান্ট’। অভিনেতার নাম চ্যাপলিন।

দ্য গ্রেট চার্লি চ্যাপলিন। মিস্টার পারফেকশনিস্ট!

 ‘ ফ্লাওয়ার স্যার...’

দুটো মাত্র শব্দ। ৩৪২ টেক হয়ে তবে ওকে হয়েছিল শট। এমন অভিজ্ঞতা অভিনেত্রী ভার্জিনিয়া চার্লির। ‘সিটি লাইটস’ ছবিতে এমন কান্ড করেছিলেন মিস্টার চার্লি। ‘সিটি লাইটস’ আজও পৃথিবীর সেরা দশ সিনেমার অন্যতম।

Chaplin1

আসলে তিনি জানতেন ঠিক কী চাইছেন। মাথা এবং চোখ দুইয়ের মধ্যে গেঁথে থাকা দৃশ্যকে সফলভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য চার্লি সব সময় ক্লান্তিহীন। কোনও কিছুর সঙ্গেই আপোস করতেন না। সহঅভিনেতা-অভিনেত্রীদের থেকেও ঠিক তেমনটাই আশা করতেন। হতাশ হতেও হয়েছে।

একবার নাকি একাকে নিয়েই ছবি তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। যে ছবিতে তিনিই একমাত্র অভিনেতা। একেবারে একক।

চার্লির নামই হয়ে গিয়েছিল ‘কিং অফ রি-টেক’। তাঁর কাজের ধারাটাই ছিল এমন।

লম্বা অভিনয় জীবন। ৭৫ বছর পার করেও টগবগে। কিন্তু চার্লি কখনই শুধুমাত্র অভিনেতা ছিলেন না। লেখক। পরিচালক। প্রযোজক। এমনি গান বাঁধতেও পারতেন। একাই ‘শোম্যান’।

Chaplin2

ছবির সেটে চার্লি ঠিক যেন রাগী বাঘ। ভীষণ কড়া। একবার গোল বেঁধেছিল মার্লন ব্রান্ডোর সঙ্গে। ব্র্যান্ডো ছিলেন ‘মেথড অ্যাক্টর’।

‘অ্যা কাউন্টলেস ফ্রম হংকং’ ছবির শুটিং চলছে। সালটা ১৯৬৭। ব্র্যান্ডো নিজের চরিত্রটি ভালো ভাবে বুঝতে চাইছিলেন। ছবিতে তার ‘মোটিভেশন’টা ঠিক কী। চ্যাপলিনকে জিজ্ঞাসা করতেই সটান বলে দেন, ‘ ‘মোটিভেশন’ ভুলে যান। আমি ঠিক যেভাবে বলছি সেভাবে ফলো করুন।’

চার্লি নিজে ফিজিক্যাল কমেডিতে ‘মাস্টার’ ছিলেন। হাঁটাচলা, এক্সপ্রেশনকে চূড়ান্ত চেহারা দিয়েছিলেন পর্দায়। ভবঘুরে এক ‘ট্র্যাম্পে’র কান্ডকারখানায় পাগল হয়েছিল পৃথিবী। সেই ঘোর আজও কাটেনি।

প্রমাণ চাই?

আজকের মিস্টার বিনের দিকেই একবার তাকিয়ে দেখুন না!

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...