সাগরদীঘির মাছ বিক্রি সাড়া জাগিয়েছে

সামনেই আসতে চলেছে বর্ষা। যদিও এবারে তাপপ্রবাহের পারদ ঊর্ধমুখী, তবু আজ হোক বা কাল, বর্ষার দেখা তো মিলবেই। উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই বর্ষা ঢুকে গেছে বলে খবর। তবে এই লেখায় আমরা উত্তরবঙ্গ নিয়েই আলোচনা করব। মাছ চাষের ক্ষেত্রে এক নতুন অভাবনীয় পদ্ধতি প্রয়োগ শুরু হল। মালদার সাগরদীঘি ফিশফার্মে এবারেই প্রথম অক্সিজেন ভর্তি প্যাকেটে মাছের চারাপোনা বিক্রি শুরু হয়েছে।

        সাগরদীঘি ফিশফার্ম সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানকার পাঁচটি হ্যাচারিতে মাছ থেকে প্রজনন ঘটিয়ে ডিম উৎপন্ন করা হচ্ছে। রুই, কাতলা, গ্রাসকাপ, সিলভারকাপ, মৃগেল সহ বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। এই ফিশফার্মে বছরে ছ'কোটি ডিম উৎপাদন করা হয়। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা তথা বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছচাষিরা এখান থেকে চারাপোনা কিনে নিয়ে যান। অনেক সময় দূরদূরান্ত থেকে এসে মাছের চারাপোনা নিয়ে যাওয়ার সময় তা নষ্ট হয়ে যেত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মাছ চাষিদের লোকসান হত। কিন্তু নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করার পর এই সমস্যা কিছুটা হলেও অবশ্যই কমেছে। এভাবে চারাপোনা বিক্রি শুরু হওয়ার পরই সাফল্যের হার অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফিশফার্ম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ইতিমধ্যেই তারা আধুনিক এই পদ্ধতিতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে দু'লক্ষ চারাপোনা পাঠিয়েছে। মৎস্য দফতর এবং ফিশফার্মের যৌথ উদ্যোগে অক্সিজেন ভর্তি প্যাকেটে চারাপোনা বিক্রি শুরু হওয়ায় মৎস্যজীবী মহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে।

        জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সরলা মুর্মু জানান, সাগরদিঘি প্রকল্পের কথা তিনি শুনেছেন। তারা খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। মাছচাষিরা এতে উপকৃত হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং দুই দিনাজপুরের বিভিন্ন ব্লকের চাষিরা সাগরদিঘি ফিশফার্মে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে নিয়ে গিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত অক্সিজেন প্যাকে দু'লক্ষাধিক চারাপোনা বিক্রি হয়েছে। এই বছর থেকেই এই পদ্ধতি শুরু হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট মাপের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে জল ও অক্সিজেন ভরে তার মধ্যে চারাপোনা রেখে দেওয়া হচ্ছে। এই বিশেষ পদ্ধতিতে ওই চারাপোনা 'ঘন্টা পর্যন্ত রাখা যায়। এই বিশেষ অক্সিজেন প্যাকে মাছকে দীর্ঘক্ষণ অন্য জায়গায় নিয়ে গেলেও মাছের কোনোরকম ক্ষতি হচ্ছেনা। তাই উত্তরবঙ্গের মাছ চাষে সাগরদিঘি এক রকম নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে বলাই যায়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...