গোলাপী মলাট। রোগা পাতলা চেহারা। দাম ২ পয়সা। এই ছোট্ট বইটা বদলে দিয়েছিল বাংলা ভাষী মানুষের সভ্যতার ইতিহাস। আঠারো শতাব্দীর জ্বলজ্বলে আগুন। এমনই এক ভরা গ্রীষ্মের দিনে বিদ্যাসাগর সৃষ্টি করেছিলেন এই আগুনকে। যা শত শত শতাব্দী ধরে আলো দেখিয়ে আসছে বয়ে যাওয়া সময় কে। অক্ষরে অক্ষরে।
১৮৫৫-এর এপ্রিলে প্ৰথম প্রকাশ ঘটে বর্ণ পরিচয়ের। ওই বছরেরই জুনে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় ভাগ। বর্ণ পরিচয় ভাষা শিক্ষার রাজ্যে একচ্ছত্র অধিপতি।
বিদ্যাসাগরের জীবদ্দশাতেই মোট ১৫২ টি সংস্করণে পঁয়তিরিশ লক্ষের বেশি বর্ণপরিচয় ছাপা হয়েছিল।
শোনা যায় তাঁর বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাওয়ার পথে এই পুস্তকের পাণ্ডুলিপি তৈরি করেছিলেন তিনি। সংস্কৃত ভাষার দুর্বোধ্যতা থেকে বেরিয়ে বাংলা ভাষাকে সহজ ভাবে শেখার পরিসর তৈরি করেন এই ছোট্ট বইয়ের মাধ্যমে।
অক্ষর চেনার সঙ্গে সঙ্গে নীতি শিক্ষাও অন্তর্ভুক্ত করা হয় বর্ণ পরিচয়ে। বিদ্যাসাগরের শিক্ষা আন্দোলন এবং শিক্ষার প্রসারে ছিল প্রধান হাতিয়ার।