দার্জিলিং থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় হিল স্টেশন কার্শিয়াং । রবীন্দ্রনাথ এবং অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতির এই পাহাড়ী শহর পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সবুজ ঘেরা পাহাড়, সফেদ কুয়াশার চাদরে মোড়া ঝাউবন- মিলিয়ে কার্শিয়াং। উত্তরবঙ্গের এই পাহাড়ি জনপদটির গায়ে লেগেছিল ব্রিটিশ ছোঁয়া। একের পর এক ব্রিটিশ বাংলো কার্শিয়াং- এর সৌন্দর্যে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। লেপচা ভাষায় কার্শিয়াং শব্দের মানে ‘ সাদা অর্কিডের স্থান’।
অর্কিড, পাহাড়, মেঘ, কুয়াশা, চা-বাগান, আর এসবের মাঝেই অপেক্ষা করে থাকে এক গা ছমছমে অনুভূতি। পাহাড়ী রাস্তায় ওত পেতে থাকে মৃত্যু।
মৃত্যুপুরীর মতো রাস্তা, ভূতুড়ে স্কুল বাড়ি, আর সত্যি ভূতের গপ্পো নিয়েই
কার্শিয়াং জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে নানা অদ্ভুতুড়ে কাহিনি। গল্পের বয়স খুব একটা কাঁচা নয়।
ডাওহিল রোডকে এক কথায় বলা যায় বিউটি অ্যান্ড বিস্ট- এর মেলবন্ধন। ডাও হিল থেকে ফরেস্ট অফিস পর্যন্ত এলাকা জুড়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে এমনই নানা গল্প শোনা যায়।
দুর্দান্ত পাহাড়ি সৌন্দর্য তো আছে তার সঙ্গে আরক হিসেবে মিশেছে ভৌতিক কান্ড কারখানা। এই রাস্তাকে বলা হয় ‘ডেথ রোড’। রাত বিরেত হোক বা দিন দুপুর অনেকেই নাকি আধিভৌতিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন এলাকার কাঠুরেরা কাঠ কাটতে গিয়ে মুণ্ডুহীন ধড় বিশিষ্ট একটি বাচ্চা ছেলেকে দেখেছে। ঘন কুয়াশার মধ্যে হঠাৎ দেখা দিয়েই সে জঙ্গলে হারিয়ে যায়। একবার নয় বারবার তাকে দেখা গিয়েছে। মাঝেমাঝে ধূসর পোশাকে এক বৃদ্ধাকেও দেখা যায় এই রাস্তায়।
এমন দৃশ্য দেখে মানসিক ভারসাম্য হারানো, এমনকি মৃত্যু, আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
শতবর্ষ প্রাচীন ভিক্টোরিয়া বয়েজ হাইস্কুল ঘিরেই নানা পরাবাস্তব কাহিনি ডালপালা মেলেছে। ১৮৭৯ সালে ব্রিটিশ উদ্যোগে এই স্কুল স্থাপিত হয়।
ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত যখন গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে স্কুল বন্ধ থাকে তখন নানা রকম শব্দ শোনা যায়। তা কখন মানুষের ফিসফিসানি, কখনও বা অন্য কিছু।
স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই স্থানীয় মানুষের মুখে ফেরা এই ভূতুড়ে কথা নেহাত মন গড়া কাহিনি বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
ভূত-ছমছমে কাহিনিতে ঘেরা এই হিলস্টেশনে অনেকেই আসে পরাবাস্তব অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে। ভারতের অন্যতম ভয়ঙ্কর হিলস্টেশনের তকমা পেয়েছে এই শহর। পর্যটকদের কাছে কার্শিয়াং- মানেই তাই আলাদা অনুভূতি।