মরসুমের প্রথম ম্যাচ জিতলেও ফাইনালে ব্যর্থ হল লাল-হলুদ ব্রিগেড। ১০ জনে পিছিয়ে পড়েও ডুরান্ড কাপের ফাইনালে শেষ হাসিটা মোহনবাগান সুপার জায়ান্টই হেসে গেল। । ডুরান্ডে ১৭তম ট্রফি জিতল সবুজ মেরুন। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ১-০ ম্যাচ জিতে নিল ‘বাগান’ দল। ঐতিহ্যের ডুরান্ড কাপের ১৩২তম সংস্করণ শেষ হল। শেষ ১০টি কলকাতা ডার্বিতে মোট ন’বার জিতেছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। পুরো ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেন মোহনবাগানের ফরোয়ার্ড দিমিত্রি পেত্রাতোস।
খেলার শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল দুই দলের মধ্যেই আক্রমনের লড়াই, কেউ কাউকে ছাড়তে চাইছে না। খেলার ৪ মিনিটের মাথায় মোহনবাগান ম্যাচের প্রথম কর্নার পায় কিন্তু তখন পেত্রাতোস কর্নার থেকে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তিনি মাঠের মধ্যেই বল রাখতে পারলেন না।
খেলার ১৫ মিনিটের মাথায় ফের মোহনবাগান কর্নার পেলেও, তা কাজে লাগাতে পারেনি। থ্রো পেয়েও কোন বড় সুযোগ তৈরি করতে পারল না। এরপর ঠিক ১৯ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গলের মহেশ নাওরেম পায়ে বল পেয়ে আরেকটু হলে গোল দিয়ে দিত। তবে,আনোয়ার আলি সেই শটকে নিঁখুত ভাবে ট্যাকেল করে সেই আক্রমণ আটকে বল বাইরে বের করে দেন। খেলার ৩০ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গল চেষ্টা চালায় মোহনবাগানের রক্ষন ভাঙার জন্যে কিন্তু শেষমেশ অসক্ষম হয়। বাগান দল তাদের রক্ষণতা আটকে দেয়।
খেলার প্রথমার্ধেই লাল হলুদ টিমের সেন্টার ব্যাক এলসে চোট পান। চোট নিয়ে খানিকটা সময় খেললেও, তাকে উঠে আসতে হয়। ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ কুয়াদ্রাত এলসের বদলে পার্দোকে মাঠে নামান। খেলার প্রথমার্ধের শেষের দিকে মোহনবাগান গোলের সুযোগ পেলেও সেটাকে কাজে লাগাতে পারেনি কোন মতেই। ৪৫ মিনিট প্রথমার্ধে গোলশূন্য হয়ে থাকে দুই দল।
তবে খেলার দ্বিতীয়ার্ধে মোড় ঘুরে যায়। দ্বিতিয়ার্ধের ৪৭ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গল গোল করার সুযোগ পায়। আনোয়ার আলির ব্য়াক পাস আরেকটু হলেই পেয়ে যাচ্ছিলেন সিভেরিয়ো। তবে আবারও, বিশাল কাইথ বল ট্যাকেল করে নেয়। তবে সময় গোড়ালেও, কোন দলই গোল করতে পারেনা। রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে হলুদ কার্ড দেখেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত।
ভালই লড়াই চলছিল। তবে খেলার ৬১ মিনিটের দিকে বল দখলের লড়াইয়ে হাই বুটের জন্য দ্বিতীয় হলুদ কার্ড ও লাল কার্ড পান মোহনবাগানের তরুণ স্ট্রাইকার অনিরুদ্ধ থাপা। তাই এবার সবুজ মেরুনের দলে হয়ে যায় ১০ জন।
তবে কথায় আছে, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।’ মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বোধ হয় এই কথাটাকে মনে গিঁথে নিয়েছিল। একজন কমে নিয়ে খেলে সবাই কে তাক লাগিয়ে দেয়। এই বদলা তারা নেবেই। একের পর এক আক্রমণ তোলে সবুজ মেরুনের ব্রিগেড।
এবার ৭১ মিনিটে, ৯ নম্বর জার্সি পেত্রাতোস দারুন প্রতিআক্রমণে লাল হলুদ বক্সের বক্সে পৌঁছনোর আগেই শট মেরে দেন তিনি। সেই জালে জড়িয়ে যায় বল। লিড পেয়ে যায় বাগান।
এরপর ইস্টবেঙ্গল চেষ্টা করলেও আর ফিরতে পারেনি। ক্লেটন, নন্দকুমাররা গোলের চেষ্টা করলেও, সাফল্য পাননি। শেষমেষ যুবভারতীতে, ১-০ গোলেই ডুরান্ড ফাইনাল জিতে নিলেন মোহনবাগানের দল।