সরকারি গ্রন্থাগারে উঠে যাচ্ছে সদস্য ফি

আচ্ছা, আপনি কি বই পড়তে ভালোবাসেন? কিন্তু দিন দিন যেভাবে বই-এর দাম বেড়ে যাচ্ছে, তার ফলে বই কিনে আর পড়া হয়ে উঠছেন? অথবা, কোনো লাইব্রেরিতে গেলেও কিছু খরচ তো আছেই সেখানকার ফি বাবদ-তার ফলে সেই আশাতেও বালি।তাহলে এবারে আপনার আনন্দ করবার সময়। গ্রন্থাগার পরিষেবা একেবারে নিঃশুল্ক করে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এতদিন কেবল শিশু সদস্যদের এই সুবিধা দেওয়া হত, এখন থেকে সকলেই এই সুবিধা পেতে পারবেন।

   বর্তমানে গোটা রাজ্যে সরকারি গ্রন্থাগারে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ সদস্য রয়েছে খাতায়-কলমে। এর মধ্যে শিশু পড়ুয়ারা ইতিমধ্যেই ওই সুবিধা পেয়ে থাকে। বাকিদেরও এবার থেকে ওই সুবিধা দেওয়া হবে। এলাকা বিশেষে ওই সদস্য ফি ছিল বছরে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অনেক ক্ষেত্রেই উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং লোকবলের অভাবে এই ফি যথাযথভাবে আদায় হয়না। পড়ুয়ারাও অনেকে বকেয়া ফি-এর কারণে লজ্জা বা ভয়ে গ্রন্থাগারে আসা ছেড়ে দেয়। এইসব দিক বিবেচনা করেই সদস্য ফি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী প্রায় এক কোটি বই পড়ুয়া নতুন করে নিখরচায় ফি বছর সরকারি গ্রন্থাগার ব্যবহারের সুযোগ পাবে। বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সের প্রায় ৩৫ লক্ষ শিশু পড়ুয়া এই সুবিধা পায়। মুখ্যমন্ত্রী চান, গ্রাম ও শহরের যত বেশি মানুষ গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়ে সেগুলি পরে নিজেদের শিক্ষিত করুক বা মনের খোরাক পান। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাই সরকারি ও বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলির উন্নয়নের জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। এই গ্রন্থাগারগুলিকে বই কেনা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। এবার থেকে তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করা হচ্ছে। এর জন্য চলতি আর্থিক বছরেই ৬কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দফায় দফায় রাজ্যের দু'হাজার এই ধরণের গ্রন্থাগারকে ওই সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

   জেলা এবং রাজ্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারগুলির ক্ষেত্রেও আমূল সংস্কার করা হবে বলে এদিন জানিয়েছেন মন্ত্রী। কলকাতার রাজ্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ইতিমধ্যেই ৩৫হাজার বইয়ের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। পাশাপাশি জেলা গ্রন্থাগারগুলির ক্ষেত্রেও সেই প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে আলাদা করে বেশ কিছু বুক কর্ণার গড়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বা জেলা গ্রন্থাগারের তরফে আইএএস এবং ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার কোচিং দেবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এভাবে বিভিন্ন গ্রন্থাগারকে  শুধুমাত্র বই পড়ার জায়গা হিসেবে না রেখে অনেক বৃহৎ অর্থে ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকারি তরফ থেকে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...