ভারতীয় সিনেমায় অসামান্য অবদানের জন্য এবার ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কারে ভূষিত হবেন মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি বাংলা ও হিন্দি সিনেমা জগতকে নিজের কাজের দ্বারা সমৃদ্ধ করে এসেছেন। এবার সেই কারণেই ভারতের সর্বোচ্চ চলচিত্র পুরস্কার পাবেন তিনি।
হাইলাইটসঃ
১। ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার পাচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী
২। ১৯৭৬ সালে ‘মৃগয়া’ ছবির মাধ্যমে ফিল্মি কেরিয়ার শুরু করেন
৩। ৮ অক্টোবর পুরস্কার পাবেন তিনি
১৯৭৬ সালে বাঙালি পরিচালক মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ ছবির হাত ধরে নিজের ফিল্মি কেরিয়ার শুরু করেন মহাগুরু। কিন্তু পরবর্তীকালে বলিউড ইন্ড্রাস্টিতে নিজের অভিনয় দক্ষতাকে সর্বোচ্চ স্তরে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তবে হিন্দি সিনেমায় নিজের স্থান পোক্ত করার জন্য কম বেগ পেতে হয়নি তাঁকে। মিঠুনের চেহারা, এমনকী গায়ের রং নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বলিউডের ছবি নির্মাতারা। তাই স্ট্রাগেলের শুরুর দিকে হাইপ্রোফাইল পার্টিগুলোতে নাচতেন মিঠুন। কিন্তু একসময় কাজের প্রতি তাঁর একনিষ্ঠতা ও জেদ তাকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যায়। ‘ডিস্কো ডান্সার,’ ‘গুলামি,’ ‘দিলওয়ারসি,’ ‘শেওয়ালা,’ ‘সোয়ালা আন্ডার,’ ‘অবিনাশ,’ ‘ডান্স ডান্স,’ ‘ওয়াতন কে রাখালে,’ ‘পেয়ার কা মন্দির,’ ‘ওয়াক্ত কি আওয়াজ,’ ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা,’ ‘দাতা, মুজরিম,’ ‘অগ্নিপথ,’ ‘রাবন রাজ,’ ‘জল্লাদ,’ ‘হিটলার,’ ‘প্রেমপ্রতিজ্ঞা,’ ‘ফুল অউর আঙ্গার,’ ‘চন্ডাল,’ সহ একাধিক হিট হিন্দি সিনেমায় কাজ করেন তিনি। দর্শকদের কাছে হয়ে ওঠেন সবার প্রিয় ‘ডিস্কো ডান্সার।’
তবে শুধুমাত্র হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে নয় বাংলা সিনেমা জগতেও তার কাজ প্রশংসিত হয়েছে। তিনি বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া, ভোজপুরি, তামিল, তেলুগু, কন্নড় এবং পাঞ্জাবি ছবি সহ ৩৫০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এছাড়াও তিনি ১৯৮৯ সালে লিম্কা বুক অফ রেকর্ডসে প্রধান অভিনেতা হিসাবে ১৯টি চলচ্চিত্র মুক্তির রেকর্ডধারী।
সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে অশ্বিনী বৈষ্ণ এক্স হ্যান্ডেলে এই খবর জানিয়ে লেখেন, “মিঠুন দা’র অসাধারণ সিনেম্যাটিক সফর সব প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা। কিংবদন্তি অভিনেতাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেকশন জুরি।” ৮ অক্টোবর ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।
বর্তমানে মিঠুন তাঁর আসন্ন বাংলা ছবি ‘শাস্ত্রী’ নিয়ে প্রচারে ব্যাস্ত রয়েছেন। কাজের প্রতি তার অদম্য উৎসাহ দেখে তার বয়স ভাবার সুযোগ পান না দর্শকমহল। সত্তর বছর বয়সেও তিনি বাংলা ও হিন্দি দুই ইন্ডাস্ট্রিতে সমান তালে কাজ করে চলেছেন। প্রায় অর্ধ শতাব্দীজুড়ে ভারতীয় সিনেদুনিয়ায় রাজত্ব করার কারণে জাতীয় পুরস্কার ও পদ্মসম্মান আগেই এসেছিল তার ঝুলিতে। এবার ‘দাদাসাহেব ফলকে’ পুরস্কারে ভূষিত হবেন তিনি।