কেরলের মন্দির স্থাপত্যের আদলে নির্মিত চেরামান জুমা মসজিদ

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস আজও বাঁচিয়ে রেখেছে প্রাচীন বহু স্থাপত্য শৈলী। যার মধ্যে অন্যতম হল কেরলের চেরামান জুমা মসজিদ। নবী মহম্মদের প্রয়াণের আগেই এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে মসজিদ নির্মাণের পিছনে যাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তিনি হলেন কেরলের হিন্দু রাজা চেরামান পেরুমল। কথিত আছে, একবার রাজা পেরুমল স্বপ্ন দেখেছিলেন যে অমাবর্স্যার রাত্রে চাঁদ দুভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। এই স্বপ্নের কথা রাজা তাঁর সভায় উপস্থিত জ্যোতিষীদের জানিয়ে ছিলেন।

কিন্তু তাঁরা কেউ সেই স্বপ্নের কারণ সম্পর্কে জানাতে পারেননি।  কিছু আরব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সিংহল যাওয়ার সময় তিনি  তাদের সেই স্বপ্নের কথা বলেছেন। তখন তাঁরা বলেছিলেন এই অলৌকিক ঘটনা আরবের নবী মহম্মদের মিরাক্যাল। শোনা যায় এই ব্যাখা শুনে রাজা পেরুমল গোপনে মক্কায় নবীর সঙ্গেও দেখাও করেন। তাঁর জীবনের পরবর্তী ভাগ বেশ ধোঁয়াশায় ঢাকা। ওমানে রাজার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তাঁর রাজধানী কোডুঙ্গাল্লুরে  আত্মীয়-বন্ধুদের চিঠি দেন সেই চিঠিতে ব্যবসায়ীদের মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিলেন। তারপরেই 'চেরামান জুমা মসজিদ'টি নির্মাণ করা হয়েছিল।

 

Mosque1

 

পরবর্তী সময়ে মসজিদটি বহুবার সংস্কার করা হয়েছে। ৬২৯ সালে মসজিদের নির্মাণকার্য শেষ হয়েছিল।  ১৫০৪ সালে লোপো সোয়ারেস ডি আলবার্গিয়া আক্রমণে মসজিদটি ধ্বংস হয়েছিল। তারপরে ১৯৮৪ সাল নাগাদ আবার মসজিদের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলির নবনির্মাণ করা হয়।

মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল কেরলের স্থাপত্যকলার উপর নির্ভর করেই। কেরলের প্রাচীন হিন্দু সংস্কৃতির ছোঁয়া রয়েছে স্থাপত্য শৈলীতে। বহু মানুষ এই মসজিদটির সম্পর্কে জানেন না। কিন্তু এটিই ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম জুমা মসজিদ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...