বাড়িটিকে দেখলেই মনে হবে কোনও পোড়ো ভূতুড়ে বাড়ি। জড়িয়ে ধরে রয়েছে বট গাছের ডাল। কোনও কোনও ঘর থেকে আবার খুলে পড়ছে জানালা-দরজা। ছাদ থেকে খুলে পড়ছে চাঙড়। অত্যন্ত জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি দপ্তর হল ‘দমকল’। এই বাড়িটিই কোন্নগরে দমকল ভবন বা দমকল অফিস। ভবনের জীর্ণ দুর্দশা দেখে স্থানীয়রা দীর্ঘ দিন ধরে প্রশ্ন তুলেছে। অথচ এই অফিসেই কর্মীরা বিপদের আশঙ্কা নিয়েই বসবাস করছেন দীর্ঘদিন ধরে। বহুবার সরব হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে দমকল কেন্দ্রকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে কোন্নগর পুরসভার উদ্যোগে নতুন জায়গায় নতুন অফিস বাড়ি পেতে চলেছে দমকল। পুরসভার এই উদ্যোগে খুশি কোন্নগর বাসিন্দারা।
জি টি রোড সংলগ্ন এলাকায় থাকা এই দমকল অফিস থেকেই উত্তরপাড়া বিধানসভার অন্তর্গত সমস্ত জায়গার মানুষ এই দমকল বিভাগের সুবিধা পায়। তাই পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ঠিক করা হয়েছে যে কোন্নগর রেল স্টেশনের কাছেই হিম পাইপ এলাকায় প্রায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি জমি দমকল বিভাগকে হস্তান্তর করা হবে।
জানা গিয়েছে, নতুন অফিসটি স্টেশনের কাছে হওয়ায় সেখানের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত। ফলে দমকল বিভাগও বিপদ আপদে খুব দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারবে।
আগামী মাসেই জমি দমকল বিভাগকে হস্তান্তর করে দেওয়া হবে। আর যতদিন নতুন বিল্ডিং সেখানে তৈরি হচ্ছে, পুরসভার তরফে কাজ চালানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে এক কোন্নগরবাসিন্দা জয়ন্ত চক্রবর্তী নামে বলেছেন,” যারা মানুষের বিপদে রাত দুপুরে ছুটে যান সেই দমকল কর্মীরাই দীর্ঘদিন ধরে বিপদে। এই ভগ্নদশার বাড়িটিতে থেকেই কাজ চালিয়েছেন দমকল কর্মীরা। যা খুবই বিপদজনক। কোন্নগরের মানুষ হিসাবে কখনই কেউ চায়নি যে দমকলের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এখান থেকে সরে যাক। কিন্তু এবার কোন্নগর পুরসভা যে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে এটা খুবই আনন্দের।”
কোন্নগর পুরসভার পুর প্রধান, স্বপন দাস বলেছেন, “দমকলটা যাতে কোন্নগর থেকে উঠে না যায় তার জন্য সব রকম চেষ্টা ও সাহায্য করেছি। রাজ্য সরকার ও দমকল বিভাগের আধিকারিকরা এসে জমি দেখে গিয়েছেন। বেশ কয়েকটি জমি দেখানো হয়েছিল। তার মধ্যে কোন্নগর স্টেশনের কাছেই হিম পাইপ এলাকায় একটি জমি তাদের পছন্দ হয়েছে। পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ওই জমিটি ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিয়েছি। তারপর দমকল কতৃপক্ষ ঠিক করে নেবে নতুন অফিস বাড়ি তারা কবে তৈরি করবে। আপাতত যাতে উঠে না যায়, তার জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ী ভাবে একটি জমি ও ঘর দিয়েছি কাজ চালানোর মতো ।”