‘চামায়াভিল্লাকু’ উৎসব

শিবের মতো স্বামী লাভের আশায় মেয়েরা ব্রত পালন করেন। পুজো-অর্চনা,উপবাস সবই চলে। কিন্তু ভেবে দেখেছেন উল্টোটা যদি হয়। মানে মনের মতো স্ত্রী পাওয়ার আশায় পুরুষরা ব্রত রাখছে। কৃচ্ছসাধন, উপবাস?
এমন উলোটপুরাণ কিন্তু দূর্লভ নয়। কেরলের কোলামে কাট্টাকুলাঙ্গারা শ্রী দেবী মন্দিরে প্রতিবছর মনের মতো স্ত্রী পাওয়ার আশায় ব্রত রাখেন পুরুষরা। বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই প্রথা। ‘চামায়াভিল্লাকু’ উৎসব উপলক্ষে নারীর সাজে সেজে ওঠেন পুরুষরা।
প্রতি মার্চ মাসের ১০-১২ দিন ধরে চলে উৎসব। শেষ দিনে ইচ্ছুক পুরুষরা দক্ষিণী নারীর সাজে পুজো নিবেদন করেন মন্দিরে। শাড়ী, গয়না, জুঁইফুলের মালায় সেজে মেয়ে হয়ে ওঠার চেষ্টা। দেখে বোঝার এৎটুকুউপায় থাকে না যে তারা নারী বেশি পুরুষ।
রুপান্তরকামী বহু মানুষও আসেন এই উৎসবে। তারা বলেন প্রতিদিনের জীবনে তাদের যে ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় এই বিশেষ দিনটাতে সেই যন্ত্রণাগুলো যেন ম্লান হয়ে যায়।
উৎসবের উৎস সন্ধানে
কীভাবে উৎপত্তি হল এমন অভিনব উৎসবের? তার সন্ধান একটি স্থানীয় কাহিনির খোঁজ মেলে।
সেই অনুযায়ী, একদল রাখাল প্রতিদিন মেয়ের সাজে খেলা করত। একটি পাথরকে তারা ভগবান রূপ মনে করত। স্ত্রী সাজে দেব পুজো এই ছিল তাদের খেলা।
একদিন সেই পাথর দেবী রূপে আবির্ভূতা হলেন সেই রাখাল বালকদের সামনে। ইচ্ছেপূরণের বর দিলেন তাদের।
বাতাসের বেগে সেই খবর ছড়িয়ে যায় গ্রামে। সেই থেকে গ্রামের পুরুষরা স্ত্রীলোক বেশে দেবী পুজোয় অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। পরে তা প্রথা হয়ে যায়। সব বয়সী পুরুষরাই নিজের মনের কামনা পূরণের জন্য দেবীকে পঞ্চপ্রদীপ নিবেদন করতে পারে। মহিলারাও আসেন পুজো দিতে।
কোলমের এই মন্দিরের দ্বার খোলে প্রায় মাঝরাতে। রাত ২ থেকে ভোর ৫ টা। তার মধ্যেই মন্দির দর্শন করতে হয় দর্শনার্থীদের।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...