মহাকাশ বিজ্ঞানকে আরোও একধাপ এগিয়ে নিয়ে অবশেষে হল এক জল্পনার অবসান। শেষমেষ কৃষ্ণ গহ্বর বা বৈজ্ঞানিক ভাষায় যাকে বলা হয় ব্ল্যাক হোল তার রহস্য উন্মোচিত হল। বহু বছর ধরে মহাকাশ বিজ্ঞানিরা এই কৃষ্ণ গহ্বরের রহস্য উন্মোচনের আশায় ছিলেন, যা গতকাল অর্থাৎ এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে সম্ভবপর হল।
বহু বছর আগের এক গবেষণা থেকে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, ৫০ লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরে কোনও এক এম৮৭ গ্যালাক্সির কেন্দ্রস্থলে আত্মগোপন করে ছিল ৪০০০ কোটি কিলোমিটার ব্যাসযুক্ত এক ঘন কালো গহ্বর। ২০০৭ সালের এই তথ্য সামনে আসার পর থেকেই আলোড়ন সৃষ্টি হয় গোটা বিশ্বে। পুরো পৃথিবীর কোণায় কোণায় ছড়িয়ে থাকা মোট ৮টি টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা ছবিই আজ সমাধান করল বহু বছর ধরে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া এই রহস্যের।
গবেষণার প্রধান অধ্যাপক হেইনকো ফালকের বক্তব্য, ছবিটিতে যে ব্ল্যাক হোলের দৃশ্য ফুটে উঠেছে তা আকার ও আয়তনে আমাদের সৌরজগতের থেকেও বহুগুন বড়। কৃষ্ণ গহ্বরের প্রাপ্ত ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, এক বিশাল কালো গহ্বরের আশপাশ আলোকিত করে রয়েছে এক ধ্রুব জ্যোতি। বিশেষজ্ঞরা জানান, কৃষ্ণ গহ্বরের দিকে ধেয়ে আসা অত্যন্ত উত্তপ্ত গ্যাসের থেকেই উৎপত্তি হয়েছে এই জ্যোতির। তাঁরা জানান, এই জ্যোতির তীব্রতা এতটাই বেশি যে সে সম্পূর্ণ ব্রহ্মান্ডের সমস্ত জ্যোতিষ্কের আলোকে একাই ম্লান করে দিয়েছে। তাঁর এই অতি তীব্র জ্যোতির কারনেই এতদূর থেকে দৃশ্যমান হয়েছে এই কৃষ্ণ গহ্বর।
গবেষকরা জানান, সূর্যের থেকে ৬৫০ গুন বড় এই কৃষ্ণ গহ্বরটি। মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ব্ল্যাক হোলের মধ্যে অন্যতম ভারী ব্ল্যাক হোল এটিই। এতদিন শিল্পীর চোখ দিয়ে এই ব্ল্যাক হোল প্রত্যক্ষ করেছিল গোটা বিশ্ব। আজ তাদের সামনে ব্ল্যাক হোলের সম্পূর্ণ আসল ছবি তুলে ধরতে পেরে আপ্লুত গবেষকগণ।