উর্বরতার দেবী বলা হয় 'মা কামাখ্যাকে'

উর্বরতার দেবী বা রক্ষাকারী দেবী বলা হয় মা কামাখ্যাকে। ভারতের উত্তরপূর্বে অসম রাজ্যেই রয়েছে দেবীর মন্দির। এই মন্দির 'কামাখ্যা মন্দির' নামেই জনপ্রিয়। সতীপিঠের ৫১ টি ও চারটি আদি শক্তি পিঠের মধ্যে এই মন্দির অন্যতম। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর লেখাতেও উল্লেখ রয়েছে কামাখ্যা মন্দিরের। সেই সময় কিরাত জাতীয় উপাস্য দেবী মনে করা হত। তাছাড়াও ৩৫০-৬৫০ সালের কামরূপ রাজ্যের বর্মণ রাজবংশের শাসনকালেও এই মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল। সেই সময় বহুবার ধ্বংস হতে হয়েছিল এই মন্দিরকে। 

সুলেমান কিরানির সেনাপতি কালাপাহাড় প্রথম এই মন্দির ধ্বংস করেছিল। ঐতিহাসিক প্রমাণ থেকে পাওয়া গেছে যে, আলাউদ্দিন হুসেন শাহ যখন কামতা রাজ্য আক্রমণ করেছিল। তখন কামাখ্যা মন্দির ধ্বংস করেছিল। তারপর কোচ রাজবংশের রাজারা আবার পুনর্নির্মাণ করেন 'কামাখ্যা মন্দির'।

 

Kamakhya1

 

পরে এই মন্দিরের কাছাকাছি আরও কিছু মন্দির নির্মাণ করা হয়। দশমহাবিদ্যার মন্দির রয়েছে ঐ স্থানে। দশমহাবিদ্যা অর্থাৎ মহাকালী, তারা, ষোড়শী বা ললিতাম্বা ত্রিপুরা সুন্দরী, ভুবনেশ্বর বা জগদ্ধাত্রী, কামাখ্যা, শৈলকন্যা, ব্রক্ষচারী বা তপস্যারিণী, মঙ্গলচন্ডী, কুষ্মান্ডা, মহাগৌরী, চামুন্ডা, কৌষিকী, দাক্ষায়ণী-সতী, চন্দ্রঘন্টা, স্বন্দমাতা, কালরাত্রি, কাত্যায়ণী, সিদ্ধিদাত্রী, শাকম্ভরী, হৈমবতী, শীতলা, সংকটনাশিণী, বনচন্ডী, দেবী দুর্গা, মহাভৈরবী, ধূমাবতী, ছিন্নমস্তা, বগলামুখী, মাতঙ্গী ও দেবী কমলা। দেবীর এই সব রূপের একটি মন্দির রয়েছে। 

প্রাচীনকালে খাসি উপজাতি বাস করতেন এই অঞ্চলে। তাঁরাই এখানে পশুবলি দেওয়া শুরু করেছিলেন। তবে বর্তমান সময় পশুবলি দেওয়ার সংখ্যা আগের তুলনায় কমে গিয়েছে। কালিকা পুরাণ অনুসারে 'মা কামাখ্যা দেবীর' উপাসনা করলে সব ইচ্ছা পূরণ হবে। প্রত্যেক বছর অম্বুবাচী মেলা অনুষ্ঠানে, মনসা পূজা ও দূর্গাপূজার সময়ে প্রচুর মানুষ আসেন এই মন্দিরে। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...