ইতিহাস ও গল্পকথার রঙ মেখে সদা রঙিন রাজস্থান। তবে শুধু ইতিহাস পাতাতেই নয়, পর্যটকদের জন্যও যথেষ্ট আকর্ষণীয় এই স্থান। দেশের মরু রাজ্য রূপে পরিচিত রাজস্থানে বহু গুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণ কেন্দ্র আছে। এক বার ঘুরে আসা যথেষ্ট নয়। রাজপুতদের হাতে তৈরি রাজস্থানে যেমন রয়েছে সুন্দর মরুভূমি ঠিক তেমনি রয়েছে আশ্চর্য সব বন্যপ্রাণী ও জনপ্রিয় সব মন্দির এবং দূর্গ। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক ভিড় জমান এই রাজ্যের আনাচে কানাচে।
এই নিবন্ধে রাজস্থানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভ্রমণকেন্দ্রের তালিকায় দেওয়া হল।
আম্বের দূর্গ: রাজধানী জয়পুর থেকে আম্বের দূর্গর দূরত্ব খুবই কম। মাত্র ১১ কিলোমিটার। রাজস্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয় স্থান রূপে বিবেচিত আম্বের দূর্গের অপর নাম অম্বর। ভগবান অম্বেলিকেশ্বরের নাম থেকেই দূর্গের নামকরণ হয়েছে। রাজপুত ও মোঘল শিল্পকলা মিলেছে এই দূর্গের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য কলায়। বলিউডের জনপ্রিয় 'যোধা আকবর' ছবির একটি দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল এই দূর্গে।
অ্যালবার্ট হল যাদুঘর: রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে অবস্থিত সে রাজ্যের সবচেয়ে পুরনো যাদুঘর। নাম অ্যালবার্ট হল যাদুঘর। লন্ডনের অ্যালবার্ট যাদুঘরের আদলে নির্মিত এই যাদুঘরের স্থাপত্য শৈলীতে নিদর্শন পাওয়া যায় ভারতীয় ও সারসেনিক সংস্কৃতির। জয়পুরের নিবাস বাগানের মাঝে রয়েছে এই যাদুঘরটি। ১৮৮৭ সালে নির্মিত এই যাদুঘরটির ডিজাইন করেছিলেন স্যামুয়েল সুইটন জ্যাকব। জয়পুরের এলে এই যাদুঘরে আসবে না এমন পর্যটক খুব কম রয়েছে।
হাওয়া মহল: রাজপুত মহারাজা প্রতাপ সিং দ্বারা নির্মিত হাওয়া মহল রাজস্থানের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন। ১৭৯৯ সালে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পাঁচ তলার সমান উচ্চতা বিশিষ্ট এই সৌধটি সম্পূর্ণ বেলে পাথর দ্বারা নির্মিত। পিঙ্কি সিটি নামে পরিচিত জয়পুর শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণকেন্দ্র হল হাওয়া মহল।
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান: দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভয়ারণ্য হল রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান। আরাবল্লী ও বিন্ধ্য পর্বত বেষ্টিত প্রায় ১,৩৩৪ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যে দেখা মিলবে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের। ১৯৮০ সালে এই অভয়ারণ্যে ব্যাঘ্র সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হয়। তবে বাঘ ছাড়াও একটি প্রাচীন দূর্গের দেখা মিলবে এই অভয়ারণ্যে। যেটি এখন প্রায় ভগ্নদশায় রয়েছে।
যন্তর মন্তর: প্রাচীন ভারতের আশ্চর্য সৃষ্টিরগুলোর মধ্যে একটি হল যন্তর মন্তর। ইউনেস্কোর 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট' রূপে পরিচিত। জয়পুরের এই স্তম্ভটি ২০টি স্থায়ী যন্ত্রের সমষ্টি। সারা ভারতে মোট পাঁচটি যন্তর মন্তর রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম জয়পুরের মানমন্দিরটি। ১৭২৭ থেকে ১৭৩৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে যন্তর মন্তর নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা দ্বিতীয় জয়সিংহ। জয়পুর এই মানমন্দিরটি দেখতে দেশ ও বিদেশের বহু পর্যটকরা ভিড় জমান।