সারা পৃথিবীতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ‘ভেগান’ দের সংখ্যা। ‘ভেগান’ মানে যদি বোঝেন ‘ভেজিটেরিয়ান’ তাহলে কিন্তু ভুল ভাবছেন। ‘ভেজিটেরিয়ান’ মানে কিন্তু ‘ভেগান’ নয়।
ভেজিটেরিয়ান মানে হচ্ছে নিরামিষাশী আর ভেগান হচ্ছে উদ্ভিদভোজী৷
‘ভেগান’ আর ‘ভেজিটেরিয়ান’ দুজনেই নিরামিষাশী। কিন্তু মূল পার্থক্য হল ‘ভেজিটেরিয়ান’রা মাছ-মাংস বা ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু ‘ভেগান’রা মাছ-মাংস তো বটেই প্রাণী থেকে উৎপাদিত কোনো কিছুই খায়না৷ ডিম, দুধ, পনির, মাখন যা ভেজিটেরিয়ান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, ভেগানরা সেসব স্পর্শ থেকেও দূরে থাকেন।
‘ভেগান’ হওয়া এখন গোটা বিশ্বেই ‘লেটেস্ট ট্রেন্ড’ । লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে ভেগানিজম। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই গত তিন বছরে ভেগানিজম বেড়েছে ৬০০ গুন বেশি। আর ভেগান সোসাইটির তথ্য মতে, গত এক দশকে যুক্তরাজ্যে ভেগানিজমের বিস্তার বেড়েছে ৪০০ গুন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিরামিষ খাবারের চাহিদা ২০১৭ সাল নাগাদ এক হাজার গুণ বেড়েছে। এদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি।
শুধু মাত্র ব্রিটেনে সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ নিজেকে 'ভেগান স্ট্যাটাস'র মানুষ বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ যারা পোশাক এবং প্রসাধন সামগ্রীর ক্ষেত্রেও অপ্রাণীজ উপাদান থেকে তৈরি পণ্য ব্যবহার করেন।
‘ভেগান ট্রেন্ডে’ সেলিব্রিটিদের একটা ভূমিকা আছেই। আরিয়ানা গ্রান্ডে, মাইলি সাইরাস এবং এলেন ডি জেনেরাসের মত তারকারা সকলেই নিজেদের ‘ভেগান’ বলে দাবী করেছেন। গত বছর কেবল ইন্সটাগ্রামেই এ সংক্রান্ত প্রায় নয় লাখের মত পোস্ট দেওয়া হয়।
গুগল সার্চেও বিষয়টি ব্যাপক জনপ্রিয়। সবচেয়ে বেশি যেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়, তার মধ্যে রয়েছে---ভেগান খাবার কী? এবং জলবায়ু পরিবর্তনে এর ভূমিকা কী?
গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে মহিলারা নিরামিষ খাবারের দিকে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। এর পেছনে স্বাস্থ্য বিবেচনাই প্রধান ভূমিকা রেখেছে, এরপর রয়েছে পরিবেশ সচেতনতা।
ভারতেও এই ট্রেন্ড পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কয়েক বছর ধরে। বিরাট কোহলি, সোনম কাপুর, কঙ্গনা রানাওয়াত, কিরণ রাও, আমির খান, এরা সকলেই ‘ভেগান’। স্বাভাবিক ভাবেই ফ্যানেদের মধ্যেও সেই হাওয়া বইছে। বেশ কিছু মল এবং সুপার মার্কেটে ‘ভেগান ফুড’ এর আলাদা কাউন্টার রাখা হচ্ছে আজকাল। সাধারণ রেস্তোরাঁতেও মেনুতে বাড়তি নজর থাকছে ‘ভেগান ফুড’। ‘ভেগান রেস্তোরাঁও বাড়ছে বিভিন্ন মেট্রো শহরের আনাচে-কানাচে।