নিজের যদি জেদ থাকে কিছু করবার, মানুষ অবশ্যই সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। এই কথাই প্রমাণ করল অরুণিমা সিনহার বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রতিবন্ধী হিসেবে আন্টার্কটিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট ভিনশন ম্যাসিফ জয়। ২০১৩ সালে প্রথম এভারেস্ট জয় এবং একে একে সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে এই পর্বতারোহন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অরুনিমা ছোট থেকেই খেলাধুলোয় ভালো ছিলেন। তিনি জাতীয় পর্যায়ের বাস্কেটবল এবং ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। ২০১১ সালে একটি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় তাঁর ব্যাগ লুঠ করার চেষ্টা করে কিছু দুষ্কৃতি। কিন্তু তিনি তাদের ছেড়ে দিতে চাননি, এর মধ্যেই ধস্তাধস্তিতে তিনি পড়ে যান এবং একটি পা কাটা পড়ে। সেই সময় এই ব্যাপার নিয়ে যথেষ্ট শোরগোল পড়ে গিয়েছিল, হয়ত অনেকেরই মনে থাকবে।
পরে ২০১২ সালে বাচেন্দ্রি পালের অনুপ্রেরণায় পর্বতারোহণের পরিকল্পনা করেন তিনি। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের মে মাসে জয় করেন সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট। বেড়ে যায় তার আত্মবিশ্বাস। আরো এগিয়ে যাবার উদ্যম নিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সাত মহাদেশের সাতটি শৃঙ্গ জয় করার। সেই উদ্দেশ্যেই এগিয়ে চলেছেন তিনি। তার পদক্ষেপ হিসেবেই আফ্রিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো, ইউরোপের মাউন্ট এলব্রুস, অস্ট্রেলিয়ার মাউন্ট কসিউজকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট একানগুয়া জয় করে এবারে আন্টার্কটিকার মাউন্ট ভিনশন ম্যাসিফ জয়। এইভাবে নিজের অদম্য ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিয়ে সমাজের চোখে নিজেকে এক আদর্শ হিসেবে মেলে ধরতে পেরেছেন তিনি এবং জীবনে এক সত্যিকারের খেলোয়াড়ের উদাহরণ দিয়েছেন।