লাইব্রেরির ভূত

১৭৬০ খ্রীস্টাব্দে কলকাতার আলিপুরে বেলভেডর হাউস তৈরি করেন মীরজাফর।  ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল  ওয়ারেন হেস্টিংকে তিনি ভবনটি উপহার দেন।

লেফটেন্যান্ট অফ বেঙ্গলের সরকারী ভবন হিসেবেই বাড়িটি চিহ্নিত হয়ে থাকে।  স্বাধীনতার  পরে  সেই ভবন হয়ে ওথে আজকের  জাতীয় গ্রন্থাগার।

কলকাতার যে ভবনগুলি নিয়ে সাধারণের কৌতূহলের শেষ নেই তাদের মধ্যে অন্যতম হল এই ভবনটি।

২০১০ সালে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কাজ চলার সময়   ২৫০ বছরের পুরনো  এই ভবনে একটি লুকনো কক্ষ  বা ‘চেম্বার’ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।  চেম্বারটিতে কোনও দরজা জানলা কিছুই ছিল না।

সরকারী অফিসাররা চেম্বার খননের চেষ্টা করেন।  কিন্তু সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। শোনা যায় রহস্যময়ভাবে বারোজন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছিল ভবন সংস্কারের কাজ চলার সময়। তার পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি ঘিরে নানা রহস্য গল্প ও মিথ ঘুরে বেড়ায়। অনেকেই সন্ধের পর  ‘অশরীরী’র ভয়ে এই চত্বরে আসতে চান না। কেউ কেউ আবার বলেন ভবন জুরে মেয়েলি পায়ের ঘুরে বেড়াবার শব্দ শোনা যায়। সেই শব্দ নাকি ওয়ারেন হেস্টিংস-এর স্ত্রীর।  FotoJet - 2019-11-08T195215.808

সরকারি ভবনে হঠাৎ এমন গা ছমছমে অশরীরী গল্পের উৎস  খুঁজতে গেলে ইতিহাস বিশদ কোন তথ্য দেয় না। তবে একটি তারিখ পাওয়া যায়।  ১৭৮০-এর ১৭ আগস্ট

সেই সকালে সরকারি ভবনে শুরু হয়েছিল ডুয়েল  গভর্নর হেস্টিংস আর ফিলিপ ফ্রান্সিসের মধ্যে। নেপথ্যে ছিলেন ম্যাডাম গ্রান্ট।  মৃত্যু হয় ফিলিপের। সেই স্মৃতি নাকি আজও অশরীরী টান হয়ে ফিরে ফিরে আসে লাইব্রেরির সিঁড়ি আর করিডোরে।

 দেশি-বিদেশি ছাত্রদের ভূতও নাকি বই পত্র আর তাদের না শেষ হওয়া অসমাপ্ত গবেষণার জন্য নথি খুঁজতে আসে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরির মূল ফটকের সামনে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় ছায়ামূর্তিদের ‘লিফট’ চাইতে দেখেছেন কেউ কেউ।

কিন্তু রহস্যের সমাধান আজও অধরা। কলকাতা শহরের অন্যতম ভূতুড়ে বাড়ির পরিচয়ের ঐতিহ্য আজও বহন করে চলেছে কলকাতা ন্যাশনাল লাইব্রেরি।

   

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...