শীতের রাতে আপনি বাড়ি ফিরছেন। বাস পাচ্ছেন না। উঠলেন শেয়ার ক্যাবে। রয়েছেন এক যাত্রী। উঠলেন আপনি। বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর সহযাত্রীর সঙ্গে দু'চার কথা হতে লাগল। তারপর আপনি ডুবে গেলেন নিজের ফোনে। শীতের রাতে গাড়ি চলছে আপন খেয়ালে। হঠাৎ পাশে তাকিয়ে দেখলেন সহযাত্রী নেই। গাড়ি চলছে আপন গতিতে। কোথায় গেল সহযাত্রী? আপনি না চিৎকার করতে পারছেন, না নামতে পারছেন গাড়ি থেকে। গুগল ম্যাপ দেখাল আপনি পার্ক স্ট্রিট সেমিটারি পেরোলেন। তবে কি!
এমন সব ঘটনা নিয়েই শুরু হচ্ছে ভৌতিক সিরিজ। কলকাতার আনাচে কানাচেই লুকিয়ে থাকেন তেনারা। এমনই একটি জায়গা সল্টলেকের উইপ্রো অফিসের থার্ড ফ্লোর।
এখানে পেপার ওলটপালট হয়ে যায়, লিফট অকারণে ওঠা নামা করে। অদ্ভুত সব আওয়াজ হয়। আরও কতো কি। আসলে সল্টলেকের যে জায়গায় উইপ্রো-র এই অফিস, সেখানে ভূত আগে থেকেই ছিল। জানা যায়, এক পরিত্যক্ত গোরস্থানের জমিতে গড়ে উঠেছিল এই অফিস। স্থানীয়রা বলেন, বরাবরই অশরীরীর উপদ্রবের জন্য কুখ্যাত ছিল এই গোরস্থান। কুখ্যাতি তার ছিল আরও একটা কারণে।
জানা যায়, এই গোরস্থানে অবাধ বিচরণ ছিল অপরাধীদেরও। এখানে আগে ছিল জলাশয় আর জঙ্গল। ধর্ষণ, হত্যা, অত্যাচার, নেশা সব কিছুই চলত এখানে। অনেকে এখানে আত্মহত্যা করত। আজ হয়তো তেনারাই বেছে নিয়েছেন থার্ড ফ্লোরকে।
অফিসের তিন নম্বর টাওয়ারের তিন তলা বছরের বেশির ভাগ সময়ই তালাবন্ধ অবস্থায় খালি পড়ে থাকে! ফের উঠতে পারে প্রশ্ন- জমজমাট এক কর্পোরেট অফিসে ভূত থাকবে কী করে? আচমকা ভূতেরা কেনই বা হানা দেবে এক অফিসে?
স্থানীয়রা বলেন, বরাবরই অশরীরীর উপদ্রবের জন্য কুখ্যাত ছিল এই গোরস্থান। তার উপরেই এই অফিস। বললেই তো আর জায়গা ছাড়া যায় না। তেনারাও যাননি। স্থানীয়দের দাবি, মৃত মানুষরা আজও সেই জায়গা ছেড়ে কোথাও যাননি! সেই জন্যই পরে যখন গোরস্থানের জমিতে উইপ্রো-র অফিস তৈরি হল, তাদেরও আস্তানা হয় ওই অফিস!
উইপ্রো-র কর্মচারীরা বলেন, মাঝে মাঝেই তাঁরা রাতের শিফটে কাজ করার সময় নানা ছায়ামূর্তি দেখতে পান। ছায়ামূর্তি দেখা যায় বাথরুমে, দেখা যায় অফিসের করিডরে। অনেক সময় কানের পাশে চাপা স্বরে অশরীরীর কণ্ঠস্বরও শুনেছেন কর্মচারীরা। তবে, ওই অফিসের সব চেয়ে ভয়ের জায়গা হল তিন নম্বর টাওয়ারের তিন তলা। ওখানে কোনও কর্মচারীকেই সাধারণত যেতে দেওয়া হয় না। বিশেষ করে নতুন কেউ এলে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হয় আগেভাগেই- ভুলেও যেন তিনি তিন তলায় চলে না যান! অবাক আপনি হতেই পারেন! অবিশ্বাসও করতে পারেন ঘটনাটা!
সে ক্ষেত্রে চেনাজানার মধ্যে কোনও উইপ্রো-কর্মী থাকলে তাঁকে একবার ব্যাপারটা জিগ্যেস করেই দেখুন না! দেখবেন, তিনি ঘটনাটা অস্বীকার করবেন না! রাতে নাইটগার্ডরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হন। অফিসের এই তিন তলা থেকে নাকি চিৎকার, শোরগোল শোনা যায়। এমনকি রাতে রক্তাক্ত মেয়ের ছায়া আর কান্নায় গোটা উইপ্রো ভৌতিক হয়ে ওঠে।