‘কী হতে চাই আমি’ ক্লাসের হোমওয়ার্ক, পরীক্ষায় খাতায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়ে কতরকম স্বপ্ন সাজায় ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর কাগজে কলমে লেখা সেই স্বপ্নের সঙ্গে সত্যি সত্যি দেখা হয়ে যায় বাস্তবের মাটিতে। পরের কয়েকটা বছরের সেই স্বপ্নকে রক্ত মাংসের চেহারা দিতে চলে ঘাম-রক্তের লড়াই। কঠোর পরিশ্রমে সফল হয় স্বপ্ন। কিন্তু কঠোর রুক্ষ বাস্তবে আছাড় খেয়ে অনেকের স্বপ্ন হারিয়েও যায়। আর্থিক সমস্যা তার বড় কারণ।
জর্জ টেলিগ্রাফ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট চাকরিপ্রার্থীদের জন্য জ্ঞান জ্যোতি স্কলারশিপের সূচনা করেছে। আর্থিক সীমাবদ্ধতা এবং অন্যান্য বাধ্যবাধকতা কাটিয়ে যা তাদের কর্মজীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে
জর্জ টেলিগ্রাফ গ্রূপের জয়েন্ট ডিরেক্টর সঞ্জীব কুমার দাস জানিয়েছেন, জ্ঞান জ্যোতি স্কলারশিপ হল একটি পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। দু'ধরনের ক্যাটাগরি আছে। তার ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় বসতে পারে। পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ও ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের স্কলারশিপের জন্য নির্বাচন করা হয়। দুটি ভাগ আছে স্কলারশিপের। মেরিট এবং মিনস। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে খুব ভাল ফলাফল করেছে এমন ছাত্রছাত্রীরা মেরিট ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা দিতে পারে। তাদের মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং জ্ঞান জ্যোতি স্কলারশিপের লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দুইয়ের ভিত্তিতে স্কলারশিপ চূড়ান্ত করা হয়। ৩০ মিনিটের লিখিত পরীক্ষায় MCQ ধরনের ২৫টি প্রশ্ন থাকে।
আর একটি ক্যাটাগরি মিনস ক্যাটাগরি। পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যের প্রচুর ছেলেমেয়ে যারা এবার এবং গত কয়েক বছর ধরে স্কুল ফাইনাল, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে তারা এই স্কলারশিপ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে পারে। আর্থিক কারণে যারা স্কিল এডুকেশন ও প্রফেশনাল এডুকেশনের ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়ে মিনস ক্যাটাগরি সেই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য।
জর্জ টেলিগ্রাফ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-এর স্কলারশিপের বিভিন্ন ভাগ ও ধরণ আছে। যেমন সামগ্রিক কোর্স ফি-র ওপর ২৫ শতাংশ, ৩৫ শতাংশ স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এমনকি ৫০ শতাংশ স্কলারশিপের সুযোগও আছে।
যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা এই দুই ক্যাটাগরিতে স্কলারশিপ পরীক্ষায় বসবে তাদেরকে সমস্ত ডকুমেন্টস আনতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলের নিরিখে একটু ইন্টারভিউ হয় তারপর স্কলারশিপ অফার করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করে যে কেউ পরীক্ষায় বসতে পারে। এমনকি কলেজ পড়ুয়া প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীও। গ্রাজুয়েট আনএমপ্লয়েড, বি.টেক, বিবিএ, বিসিএ তাদের জন্যও আছে শর্টটার্ম ডিপ্লোমা কোর্স যা জ্ঞান জ্যোতি স্কলারশিপের মধ্যে পড়বে। যেগুলোকে ফার্স্ট ট্র্যাক ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম বলা হয়। ৫-৬ মাসে কোর্সগুলো সম্পূর্ণ হয় এবং তাদেরকে চাকরির দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়।
সারাবছর বিশেষ করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর জর্জ টেলিগ্রাফ ইনস্টিটিউটে ছাত্র ছাত্রীদের আসা অনেক বেড়ে যায়। প্রতি সেন্টারেই প্রচুর ছেলেমেয়ে আসে। এপ্রিল-সেপ্টেম্বর চলতে থাকে এই ধারা। জর্জের কোর্স এমন ভাবে রূপ দেওয়া হয়েছে যাতে চাকরি ও প্লেসমেন্টের সুবিধা হয়। সব কোর্সই জব লিঙ্কড কোর্স। এই সব ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনেকেই আগ্রহ থাকলেও আর্থিক কারণে কোর্স করতে পারে না। সেই জন্য প্রতি বছর স্কলারশিপ দেওয়া হয়। বছরের শেষে নভেম্বর ডিসেম্বর নাগাদ। সেই দিক থেকে আগস্ট মাসে স্কলারশিপ এই প্রথম।
২০২৩-এ অসম আগরতলা, বিহারসহ সমস্ত ক্যাম্পাস থেকে বহু ছাত্রছাত্রী জর্জ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল মেরিট স্কলারশিপের জন্য। সেই জন্যই এগিয়ে আনা হয়। এ বছরের জন্যই এটাই একমাত্র স্কলারশিপ। 'জ্ঞান জ্যোতি' নাম দিয়েও এই প্রথম।