কর্কটরোগ। ক্যান্সার। নামটা শুনলেই যেন পায়ের তলার মাটি কেঁপে যায়। শুরু হয় সুস্থ জীবনে ফেরার লড়াই। রোগী এবং তার কাছের মানুষদের। সহ যোদ্ধা চিকিৎসকরা।
এই রাজ্যে ক্যান্সার চিকিৎসায় ভরসার নাম ডাঃ সরোজ গুপ্ত। ১৯৭৩ সালে তাঁর নামেই কলকাতার ঠাকুর এলাকায় গড়ে উঠেছে ডাঃ সরোজ গুপ্ত এবং ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতাল। কলকাতা প্রথম বেসরকারি ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরীর পিছনে রয়েছে বহু ইতিহাস। ডাঃ সরোজ গুপ্তের অক্লান্ত পরিশ্রম ফলই হচ্ছে এই হাসপাতাল।
আজ থেকে ৫০ বছর আগে কলকাতায় একটি মাত্র ক্যান্সার হাসপাতাল ছিল। যার নাম হল চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল। সেই কারণেই ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর হার অনেক বেশি ছিল। তাই মানুষের চিকিৎসার খাতিরেই ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য একটি নতুন হাসপাতাল তৈরি করতে চেয়েছিলেন ডাঃ সরোজ গুপ্ত।
যেহেতু তিনি নিজেই চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাই মানুষের দূরাবস্থার কথা নিজেও দেখছিলেন। তাই তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন মানুষের সাহায্য করার। সত্যিই সেই সময় রাজ্যের দরকার ছিল অনেকগুলি ক্যান্সার হাসপাতালের। রাজ্যবাসীর সেই প্রয়োজন মেটাতেই মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন ডাঃ সরোজ গুপ্ত।
হাসপাতাল তৈরির জন্য 'ডাক্তারবাবু' সেই সময় জমি খুঁজছিলেন। তখনই তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঠাকুরের ৬ একর জমির সন্ধান পান। হাসপাতাল তৈরির জন্য বিনামূল্যে তাকে জমি দিয়ে ছিলেন জমির মালিকরা। সেই জমিতেই তৈরি হয়েছিল ক্যান্সার হাসপাতাল। ১৯৭৩ সাল থেকেই ক্যান্সার চিকিৎসা শুরু হয়ে গিয়েছিল ঐ হাসপাতালে। প্রথম দিকে শুধুমাত্র ক্যান্সার রোগীর রোগ নির্ণয় করা হত। আর যদিও ক্যান্সার ধরা পড়ে তখন তাকে চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত।
সেই সময় বেড সংখ্যা ছিল মাত্র ২৫। এখন বেড সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১১টি। বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হেমা মালিনী ও অভিনেতা ধর্মেন্দ্র ছাড়াও বহু তারকা অর্থ সাহায্য করেছে হাসপাতালের জন্য। তবে আজ এই হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। পরিকাঠামো আধুনিক হয়েছে। রোগীদের জীবনের ছন্দে ফেরাতে নিরলস চিকিৎসকরা।