১৮৬৮ সালে মধুসূদন দত্ত তাঁর শর্মিষ্ঠা নাট্য রচনার মাধ্যমে বাংলা নাট্য জগৎ-এ পা রাখলেন। ১৮৫৯ সালে মহারাজ যতীন্দ্রমোহন সিংহের বেলগাছিয়ার নাট্যশালায় এই নাটকটি অভিনীত হল। ১৮৬০ সালে নীলদর্পণ নাটকটি নিয়ে দীনবন্ধু মিত্র পদার্পন করলেন নাট্য জগৎ-এ। এরপর ১৮৬৮ সালে গঠিত হয় বাগবাজার অ্যামেচার। বাংলা নাট্য জগৎ এর কিছু রত্ন অর্ধেন্দু শেখর, রাধামাধব কর, নগেন্দ্র লাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ধর্মদাস সুর, গিরিশ চন্দ্র ঘোষ প্রমূখ এই নাট্য দলটি গঠন করেন। তারা প্রথম অভিনয় করলেন দীনবন্ধু মিত্রের সধবার একাদশী। তাদের দ্বিতীয় নাটক লীলাবতী ১৮৭২ সালের ১১ মে অভিনীত হয় এবং ইতিমধ্যে তা অত্যন্ত সাফল্য লাভ করে। লীলাবতীর সাফল্যের পর তাঁরা একটি নাট্যশালা গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা স্বপ্ন দেখেন টিকিট বিক্রি করে নাটক দেখানোর, যাতে সাধারণ মানুষ নাটক দেখার প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাদের এই স্বপ্ন পূরণও হয়, চিৎপুরে মধুসূদন সান্যালের গৃহপ্রাঙ্গনে ৩০ টাকা ভাড়া নিয়ে মঞ্চ তৈরী করে তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেন ন্যাশানাল থিয়েটার। ১৮৭২ সালের ৭ ডিসেম্বর দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটকটির মধ্য দিয়ে ন্যাশনাল থিয়েটারের উদ্বোধন হয়। এই থিয়েটারে টিকিটের হার ছিল প্রথম শ্রেণীর চেয়ার ২ টাকা,দ্বিতীয় শ্রেণীর বেঞ্চ ১ টাকা, তৃতীয় শ্রেণী দালানের সিঁড়ি আট আনা। গিরিশ চন্দ্র ঘোষ টিকিট বিক্রি করে অভিনয়ের বিরোধী ছিলেন তাই তিনি এই দল ত্যাগ করলেন। এই থেকেই শুরু হয় বাংলায় পেশাদারী মঞ্চ ও মঞ্চাভিনয়ের।