নাইরোবি বা কেনিয়া বলতেই আমরা বুঝি, পিছিয়ে থাকা কিছু জনগোষ্ঠীর জীবন সমৃদ্ধ একটি দেশ। পুরোটা না হলেও অনেকাংশেই সত্যি এই ধারণা। ওখানকার দেশের মানুষেরা সত্যিই যথেষ্ট কষ্ট করে নিজেদের জীবন অতিবাহিত করেন। এমন কি ওখানে গিয়ে অনেক পর্যটকেরাও সমস্যার সম্মুখীন হন। এমন একটা সময় ছিল, যখন একমুঠো অন্নের সংস্থান করতে সমাজের অসম্মানজনক কাজ করতেও বাধ্য হতেন তাঁরা।
সেই সময় 'মুঙ্গানো' নামক একটি গোষ্ঠীর সাহায্যে তারা বাঁচার আশা খুঁজে পায়। মুঙ্গানো হল এমন একটি প্রশাসনিক সংস্থা, যা বিভিন্নরকম কাজকর্মের মাধ্যমে বিশেষ করে সামাজিক কাজ করে এই বস্তিবাসীদের উন্নতির চেষ্টা করতে থাকে। এর ফলে অর্বানগোষ্ঠীর মানুষেরা যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে। স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির মাধ্যমে তারা নিজেদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে শুরু করে এলাকা বাসিন্দাদের কাছে। এর ফলে বেড়েছে সচেতনতা। পাশাপাশি প্রশাসনও বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানা গেছে। ছবির মাধ্যমে তারা প্রশাসনকেও তাদের সমস্যার কথা জানিয়েছে।
তারই একটি অঙ্গ হিসেবে নাইরোবির কাম্বিমোতো কমিউনিটির কিছু সদস্য এসেছেন কলকাতায় বাংলা ভাষা শিখতে। বাংলা ভাষা তাদের কাছে একটি অতি মিষ্টি ভাষা। কিন্তু যখন বাঙালিরা খুব তাড়াতাড়ি বাংলা বলে, তখন কিছুই বোঝা যায়না। আমরা সকলেই জানি, বাঙালিরা সবচেয়ে বেশি ঘুরতে ভালোবাসে। সেই সূত্রে অনেকেই ওই দেশে যান। তাই অতিথিদের আপ্যায়নে যাতে ত্রূটি না থাকে, তাই তারা সুদূর দেশ থেকে এসেছেন বাংলা ভাষা শিখতে এবং বাঙালিকে চিনতে ও জানতে। 'স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম'-এর মাধ্যমে তারা এখানে এসেছেন। পিটার, জাইনাব, কিলোনজো, ওবি, ওবিসা, কামিল, গজবে, জেমস ওয়ামিদের ঐতিহ্য অনুসারে তাড়াতাড়ি কথা বলা মানে অন্যকে অসম্মান করা। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আরেক সদস্য মিলি রাই বলেন, মাটিতে বসে কিছু করাও ওদের ঐতিহ্য বিরোধী।
ওদের দেশে এখন মেয়েদের গুরুত্ব বাড়ছে। বাস চালানো থেকে কন্ডাক্টর, এই যুগে ছেলেদের থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই মেয়েরা। তারা বাংলা ভাষা শেখার পাশাপাশি শিখছে তারা শাড়ি পড়তে। তারা এই সবকিছু কেনিয়াবাসীদেরও শেখাতে চান। ভারতীয় সংস্কৃতির আচার-আচরণ, রীতি-নীতি সবই তাদের ভালোই পছন্দের।