"বাংলা ভাষার বিবর্তন" শব্দটি বহুল প্রচলিত হলেও সেই বিবর্তনের ইতিবৃত্ত মাউসের এক ক্লিকে জানার সুযোগ করে দিচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী। বিষয়টি তাঁরই মস্তিষ্ক প্রসূত। বাংলা শব্দের বিবিধ ব্যবহারিক বৈচিত্র দীর্ঘদিন অনুধাবন করেই প্রতিটি বাংলা শব্দের উৎস, সূত্র, ব্যবহার, প্রচলন ও ক্রমবিবর্তন সব কিছুকেই একত্রিত করার প্রয়াসে এই নতুন 'শব্দকল্প‘।
শব্দকল্পের বিশেষত্ত্ব হলো- প্রত্যেক শব্দের প্রতি পর্যায়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষিতে উল্লেখ থাকবে এতে, যা থেকে বোঝা যাবে যে শব্দটির জনপ্রিয়তা কোন পর্যায়ে কতটা ছিল, তা প্রচলিত হোক বা না হোক। এই ভিন্নধর্মী কাজটি প্রথম কোনো ভারতীয় ভাষার ক্ষেত্রে কার্যকরী হতে চলেছে। যদিও এই বিশাল যজ্ঞে তার সহযোগী হয়েছেন আরো ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল যেখানে অধ্যাপকদের সাথে আছেন কিছু গবেষক। তারা এই শব্দ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন, তা সিস্টেমেও আপলোড হচ্ছে, তবে পরীক্ষামূলকভাবে।
বাংলা শব্দ ভান্ডারের ব্যাপ্তির গভীরতার কারণেই কাজটি সময়সাপেক্ষ। যদিও বলা যেতে পারে আধুনিকতার সাথে বাংলা ভাষাকে আরো সহজলব্ধ করে তুলতে এই 'ঐতিহাসিক অভিধান' এর অবতারণা। অধ্যাপক চৌধুরীর মতে, এই তথ্য ভিত্তিক কাজটি ২০২০ এর মধ্যেই কার্যকরী হবে কিন্তু শব্দের শ্রবণযোগ্যতা ও ব্যবহারিক কার্যকারিতা (অডিও এপ্লিকেশন - যেখানে শব্দটির উচ্চারণও শোনা যাবে বা বোঝা যাবে) নির্ভর করছে আরো কিছুটা সময় ও আর্থিক অনুদানের উপর। তবে ব্যবসায়িক কোনো মাধ্যম এতে যুক্ত থাকছে না - পাঠকশ্রেণী বা বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী মানুষের কাছে সহজে পৌঁছনোর জন্য পরিষেবা থাকবে বিনা মূল্যেই। এই পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধায়ক, তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক সমন্তক দাস প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী কারণ এই ঐতিহাসিক অভিধানটি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় বসে দেখা যাবে। শুধু নিরবচ্ছিন্ন হতে হবে ইন্টারনেট পরিষেবা ।