In English
দুর্গা মা, বাঙালি সমাজের একটি অমূল্যবান ধার্মিক এবং সাংস্কৃতিক সম্বলিত অংশ। এই প্রতিষ্ঠানিত দেবীর মূর্তি সবার চেয়ে সাধারণ ও পরিচিত রূপটি, যা অধ্যাত্মিক সাহিত্যে প্রচুরভাবে উল্লিখিত। তার পূজা মহালয়া পুণ্যতিথির পর শুরু হয় এবং এটি বাঙালি সম্প্রচারিত "মহিষাসুরমর্দিনী" গানের সাথে সম্প্রচারিত হয়।
দেবীর এই রূপে তিনটি অস্ত্র দেখা যায়, সেগুলি হলো ত্রিশূল, চক্র, এবং কাটা মাথার মহিষাসুরের প্রতীক। যদিও দুর্গার অসুরদলনী রূপটি বিশেষভাবে পরিচিত নয়, এটি আমাদের সাহিত্যে প্রাপ্ত থাকে।
দুর্গার বিভিন্ন রূপের প্রচলিত উল্লেখ পুরাণে পাওয়া যায়। প্রথমত, তাকে পর্বত দুর্গা বলা হয়, যেখানে তিনি যোদ্ধ্রী হতেন এবং মরুকান্তারবাসিনি হতেন পালয়িত্রী রূপে। তারপর, তিনি চণ্ডিকা মঙ্গলের অধিদেবতা হতেন, এবং চণ্ডিকা নামে পরিচিত ছিলেন। তাকে অভয়া এবং অসুরদলনী হিসেবে বিশেষভাবে চর্চা করা হয়। তিনি বনদেবী হওয়ায় পরিচিত ছিলেন, এবং বৈদিক সাহিত্যে "অরণ্যানী" রূপে উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে।
দুর্গা পূজা বাংলাদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি শস্যদেবী এবং ধানের উৎপাদনের উন্নতির সুবাদে প্রাচীন সময়ে শুরু হয়েছিল। দুর্গা মা একটি আনন্দের উৎসব এবং আনন্দে মূক হতেন এবং এই পূজা কৃষিজীবী এবং পশুজীবী দুটি ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধিত করেছিলেন।
সচরাচর দেখা যায় না হোক, দুর্গা মূর্তির হাতে ত্রিশূল কিংবা পায়ের নীচে মহিষাসুরের কাটা মাথা থাকেনা, এই প্রতীকী বিশেষ হিসেবে প্রচলিত নয়।
এই রহস্যময় দেবীর অসুরদলনী রূপের ব্যাখ্যা প্রস্তুত থাকে মার্কণ্ডেয় পুরাণে। এখানে মহিষাসুরকে ধুম্রলোচন এবং শুম্ভ-নিশুম্ভকে দেবীর দুর্গা রূপে বধ করার বর্ণনা পাওয়া যায়। মার্কণ্ডেয় পুরাণে এই দেবীকে দ্বিতীয়োক্ত দুর্গা হিসেবে উল্লেখ করা হয়, এবং তাকে জীবধাত্রী রূপে পরিচিত করা হয়।
সাহিত্যিক আচার্য সুকুমার সেন বলেন, "মহিষাসুরমর্দিনীর পূজার মুখ্য উদ্দেশ্য হল শস্য উৎপাদনের এবং রক্ষার জন্য বসন্তে এবং শরতে শাকম্ভরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং আনন্দ উৎসব।" আসলে, এই দেবী শাকম্ভরীর অর্চনার সুবাদেই নবপত্রিকায় ধানের গাছ, বেলের ডাল, দাড়িম গাছ, অশোকের ডাল এবং মানকচুর গাছ সংযোজন করা হয়, এই গাছের উপর অর্চনা করে।
সংক্ষেপণে, দুর্গা মা বাঙালি সমাজে একটি অদ্ভুত এবং সমৃদ্ধ ধার্মিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক, যে বিভিন্ন রূপে উপস্থিত থাকেন, এবং সমাজের বিভিন্ন দিকে তার পূজা এবং অর্চনা করা হয়।
