বন্দে মাতরম
সুজলাং সুফলাং মলয়জশীতলাম্ শস্যশ্যামলাং মাতরম...
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত এই স্তোত্র আজ আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্র কি এই গান আমার সুজলা সুফলা বঙ্গভূমির জন্যও লিখে যান নি? যে বাংলা "...সকল দেশের সেরা...স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা"...(দ্বিজেন্দ্রলাল রায়)
সেই "সকল দেশের রানী" আমার জন্মভূমি, আমার মাতৃভূমি, আমার প্রাণের থেকে প্রিয় বাংলা বা পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি বলুন তো? ব্রিটিশরা তো এই পুরো বঙ্গভূমি কে টুকরো করে কেটে দিয়ে চলে গেল যেই দুঃখ আজ পর্যন্ত আমরা মুছে ফেলতে পারিনি। কিন্তু তারপরও আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে কতবার ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তার খবরও আমরা বিশেষ মনে রাখিনি। ক'জন বাঙালি জানি যে ১৯৪৭-এ যখন ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে তখন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশ বিভাজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলা প্রদেশের চৌদ্দটি জেলা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গঠিত হয়। অনেক পরে ১৯৫০ সালে কুচবিহার পশ্চিমবঙ্গের জেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। অথবা এই তথ্য কি আমাদের জানা ছিল যে চন্দননগর আগে ফরাসি উপনিবেশ ছিল? ১৯৫৪ সালে চন্দননগর হুগলি জেলার একটি অংশ হিসেবে যুক্ত হয়। অথবা এই তথ্যটাও তো আমরা জানতাম না ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুযায়ী, পুরুলিয়া জেলা বঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিহারের অপর একটি অংশ পশ্চিম দিনাজপুরের সঙ্গে যুক্ত হয়। বহুবার কাটাছেঁড়ার পর এখন পশ্চিমবঙ্গে তেইশটি জেলা রয়েছে। আয়তনের বিচারে পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে বড় জেলা হল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং সবথেকে ছোট জেলা, কালিম্পং। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা নিজে একসময় ভারতের রাজধানী ছিল এবং এইমুহুর্তে ভারতের প্রধানতম শহরগুলির একটি এবং একটি প্রধান জেলাও, যেই জেলার কোন আলাদা মহকুমা নেই।
এই যে আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোয় যে কত মণি মুক্তো ছড়িয়ে আছে তার হিসাবও কি আমরা রাখি? কত বিখ্যাত মানুষ কত বিখ্যাত লেখক, শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, অধ্যাপক, ডাক্তার, প্রযুক্তিবিদ যে আমাদের এই বিভিন্ন জেলা থেকে উঠে এসেছেন তার খবরও আমরা ক'জন আর রাখি? অথবা কত বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান বা বস্তু রয়েছে আমাদের বঙ্গের জেলায় জেলায়। আলাদা আলাদা জেলার ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। এই জেলাগুলির বৈচিত্র্যময় ইতিহাস নিয়ে এবার লিখছি "বঙ্গভূমির জেলায় জেলায়"....
..."বাংলার মাটি বাংলার জল
বাংলার বায়ু বাংলার ফল
পুণ্য হউক পুণ্য হউক
পুণ্য হউক হে ভগবান".. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।।