বাঘ সংরক্ষণের বার্তা দম্পতির

বাঘ বাঁচাও, পরিবেশ বাঁচাও’ এই স্লোগানের মাধ্যমে শুরু হল নতুন পদক্ষেপ। 'বাঘ' একদিকে যেমন ভয়ঙ্কর, অন্য দিকে ঠিক তেমনই জঙ্গলের সৌন্দর্য। একটা সময় ছিল তখন রাজারা জঙ্গলে শিকার করতে যেতেন। আর তখন বাঘ শিকার করা ছিল বেশ বীরত্বের প্রতীক। তাছাড়া জমিদারবাড়ি ও রাজ বাড়িগুলিতে দেওয়ালে ঝোলানো থাকতো বাঘের চামড়া সহ মাথা। এভাবে চোরাশিকারের জেরে আমাদের দেশে আজ ব্যাঘ্রকুল তলানিতে এসে ঠেকেছে। আর এই বাঘ সংরক্ষণের শপথ নিয়ে বহু দেশে সফরের অভিযানে নামতে চলেছেন এক বাঙালি দম্পতি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারী বন্যপ্রাণ প্রেমী রথীন্দ্রনাথ দাশ ও গীতাঞ্জলি দাশগুপ্ত সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক থেকে ‘দু’চাকায় দুনিয়া’ ঘুরে ব্যাঘ্র সংরক্ষণের প্রচার করবেন। জানা গিয়েছে তাঁরা ভারতের ৫০টি ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকা সহ আরো ১২টি দেশে বাঘের দেখা মেলে, সেখানে ও পৌঁছতে চাইছেন। নিজেদের বাইকে এই যাত্রাপথে প্রায় এক বছরে ৮০ হাজার কিমি পথ অতিক্রম করতে হবে বলেই জানিয়েছেন এই দম্পতি। 

    তবে শুধু বাঘ প্রচার নয়, পাশাপাশি ১২টি দেশের এই যাত্রাপথে বিধাননগরের দম্পতি আরও কয়েকটি বার্তাকে প্রচার করতে চান। যার মধ্যে  রয়েছে, রাজ্য বনদপ্তরের ‘সেভ ফরেস্ট সেভ ওয়াইল্ডলাইফ, ‘সেভ গ্রিন, সি ড্রিম’ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ বার্তাও জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে চান এই দম্পতি। এই বিষয়ে রথীন্দ্রনাথ জানান, অনেকদিন ধরেই পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ বাঁচানোর গুরুত্ব উপলব্ধি করছেন তাঁরা। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারি একটি সংস্থায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় থেকেই এই পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ বাঁচানোর আরও তাগিদ অনুভব করেন। তাই সাধারণ মানুষও যাতে সেই আবেদনে সাড়া দেন, তাই তাঁদের মধ্যে জনসচেতনতা প্রচার করতে উদ্যোগ শুরু করেছিলেন কয়েকবছর আগে থেকেই। এর আগে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৯টি রাজ্য ও ৫টি কেন্দ্রশাসিত এলাকায় প্রায় ২৭,১৩৮ কিমি পথ তিনি অতিক্রম করেন ‘সেভ ফরেস্ট, সেভ ওয়াইল্ডলাইফ’ বার্তা নিয়ে। এরপরে গণ্ডার বাঁচানোর আবেদন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে প্রায় ২৮২২ কিমি যাত্রাপথ অতিক্রম করেন তাঁরা। ঠিক তার পরের বছর ‘বন্যপ্রাণ বাঁচানো কেন প্রয়োজন’ সেই বার্তা নিয়ে দেশের ১০টি রাজ্যে বাইকে প্রায় ৬০২১ কিমি পথ সচেতনতা প্রচার চালান স্ত্রী গীতাঞ্জলি দাশগুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে। তারপর থেকেই বিশ্বে ভারত সহ যে ১৩টি দেশে বাঘ রয়েছে, সেখানে তাদের রক্ষা করার বার্তা নিয়ে সচেতনতা প্রচারের পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন তিনি। রথীনবাবু প্রথমে মায়ানমার যাবেন। সেখান থেকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, চীন হয়ে রাশিয়া যাবেন। রাশিয়া থেকে অবশ্য বিমানযোগে নেপালে আসবেন। সেখান থেকে ভারত হয়ে আবার ভুটান যাবেন। সেখান থেকে ভারত ছুঁয়ে বাংলাদেশ যাবেন। এরপরে সেখান থেকে প্রায় একবছর পর ভারতে ফিরে এসে নিজেদের যাত্রা শেষ করবেন তিনি।

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...