শুধুমাত্র মানুষেরই আয়ত্তাধীন ভাষা। অন্য কোনও প্রাণী এই জটিল মাধ্যমটির এত বৈচিত্রময় প্রয়োগ করতে পারেনি। সামাজিক ভাবেই মানুষ ভাষাকে আয়ত্তে আনে। তিন বছরের শিশু তার চারপাশের সমাজ থেকেই দিব্যি কথা বলতে শিখে ফেলে। মনে করা হয় প্রাচীন হোমিনিডরা যখন প্রথম পারস্পরিক সহযোগিতার পথে চলতে শুরু করে তখনই ভাষার উৎপত্তি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ অ্যান্টনি ও পি মনাকোর নেতৃত্বে একদল আণবিক জীববিজ্ঞানী লন্ডনে একটি পরিবারের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেন, সেই পরিবারের অর্ধেক সদস্য ভাষাগত সমস্যায় ভুগছেন, কিন্তু অন্যান্য ব্যাপারে তাঁরা স্বাভাবিক। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা সন্দেহ করেন এর পিছনে রয়েছে ফক্সজ(Foxpz) নামে একটি জিন।
বিজ্ঞানীরা দেখেন ওই পরিবারের যে সমস্ত সদস্যের ভাষা সমস্যা রয়েছে, ওই জিনটির প্রভাব তাঁদের কয়েকজনের ক্ষেত্রে একটু আলাদা। তাতেই তাঁদের উচ্চারণ, বাক্য তৈরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
এরপর এরকম বেশ কয়েকটি পরিবারের উপর গবেষণা চালিয়ে তাঁরা দেখেন ফক্সজ জিনটির জন্যই সৃষ্টি হচ্ছে ভাষার নানা সমস্যা। জিনটি রয়েছে অন্য স্তন্যপায়ীদের মধ্যেও। জিনটির বয়স প্রায় ১,২০,০০০ বছর। ভাষার অভিব্যক্তি ওই সময় থেকেই শুরু হয়েছে বলা যেতে পারে। তবে একটি নির্দিষ্ট জিন সমস্ত ভাষাগত বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণ করছে- এমনটা বিশ্বাস করা বেশ কঠিন। সবটা ঠিকমতো ব্যাখ্যা করা এখনও সম্ভব হয়নি।
গবেষণা চলছে, আরও কোনও জিন ভাষাগত বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণ করছে তার খোঁজ চলছে। ভাষার বিবর্তনে ফক্সজ জিন বা অন্য জিনের অবদান কতটা, গবেষণা চলছে তা নিয়েও।