আমাদের ট্রেন যাত্রায় এখন আর সাধারণত স্লিপার ক্লাসে যাওয়া হয়েই ওঠেনা। নেহাত রিজার্ভেশন না পেলে বা খুব প্রয়োজনে এসি কোচ ছাড়াই যাওয়ার দরকার পড়লে তবেই স্লিপার কোচে যাতায়াত করি আমরা। কাছে-পিঠে তবু হয়, কিন্তু দূরপাল্লার যাত্রায় তো কিছুতেই এসি কম্পার্টমেন্ট ছাড়া যাওয়া হয়না। কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি, যাঁরা প্রাণপাত করে আমাদের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেন, তাঁরা কিভাবে ট্রেন যাত্রা করেন? আমরা অনেকেই হয়তো জানিই না। জানিনা, যে ট্রেনের চালকের কেবিন আদৌ বাতানুকূল থাকেনা। তাই তাদের অবস্থা হয় শোচনীয়। সেই অবস্থাতেই এতদিন কিন্তু ট্রেনের চালকেরা তাঁদের কর্তব্য করে এসেছেন। কিন্তু এইভাবে কাজ করার ফলে প্রচন্ড গরমে বহুক্ষেত্রেই এনার্জি কমে যায় চালকদের। মনোঃসংযোগে ঘাটতি হওয়ায় বাড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। তবে এখন বোধহয় ভাববার সময় এসেছে।
এবার থেকে ট্রেনের চালকের কেবিনও বাতানুকূল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। যদিও ইতিমধ্যেই হাওড়া সহ বেশ কয়েকটি ডিভিশনে কিছু দূরপাল্লার ও কিছু লোকাল ট্রেনের ড্রাইভার কেবিনে এয়ারকন্ডিশন মেশিন বসানো হয়েছে, রেল সূত্রে খবর, ধীরে ধীরে সব ট্রেনেই এসি কেবিন তৈরী হবে। পুরোনো ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে যেগুলো আরও বেশ কিছুদিন চালানো হবে, সেগুলোও বাতানুকূল করা হবে। যথারীতি রেলের এই উদ্যোগে খুশি চালকেরা। তাঁদের অনেকেই জানান, ট্রেনের তাপমাত্রার তুলনায় চালকের কেবিনে অনেক বেশি তাপমাত্রা থাকে। শীতকালের কিছুদিন বাদে যথেষ্ট কষ্ট হয় ট্রেন চালাতে। ইঞ্জিনের গরমের জন্য শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়, ক্লান্তি আসে। তাই দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়। হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান জানান, অনেক আগে থেকেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এখন যে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। হাওড়া ডিভিশনে ৫৪টি লোকো ইঞ্জিনের মধ্যে ১৬টি বাতানুকূল করা হয়েছে। বাকি ৩০টির ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেছে।
পাশাপাশি ভারতীয় রেল দূরপাল্লার অসংরক্ষিত আসনের জন্য বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে। যাত্রীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে ট্রেনে উঠতে পারেন, আসন দখল নিয়ে যেন কোনোরকম গোলমাল না হয়, সেই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই এই ব্যবস্থা বলে জানানো হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে। প্রথমে পশ্চিম রেলে এই ব্যবস্থা শুরু করার কথা হয়েছে। যাঁরা নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁরা জানেন, জেনারেল কোচে আসন পাওয়ার জন্য নানা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যে কে আগে সিট পাবে, তা নিয়ে অনেক সময় হাতাহাতিও হয়ে যায়। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরী হয়। শুধু তাই নয়, আসন নিয়ে অনেক জায়গাতেই কাজ করে কিছু অসাধু চক্র। এগুলি দূর করতেই রেল এই বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা শুরু করতে চাইছে। রেল সূত্রে খবর, কোনো যাত্রী যখন বাছাই করা ট্রেনের জেনারেল কোচে চড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে টিকিট কাটতে যাবেন, সেই সময় বায়োমেট্রিক মেশিন দিয়ে তাঁর আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। এইভাবেই সংশ্লিষ্ট যাত্রীর জন্য নির্দিষ্ট টোকেন ইস্যু হয়ে যাবে। সংশ্লিষ্ট ট্রেনের কোচে ঠিক যতজন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা থাকবে, ততগুলিই টোকেন উপলব্ধ হবে। থাকছে ক্রমিক সংখ্যাও। প্রান্তিক স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের জেনারেল কোচে ওঠার সময় ওই সংখ্যা অনুযায়ী লাইনে দাঁড়িয়ে যাবেন যাত্রীরা।
রেলের এক আধিকারিক জানান, এই ব্যবস্থায় একদিকে যেমন জেনারেল কোচে ওঠার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হবে, তেমনই কোচের আসন দখল নিয়ে অনিয়মও দূর করা সম্ভব হচ্ছে। এই ব্যবস্থার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে, চিহ্নিত অপরাধীদের অনেক সময় আঙুলের চাপের ডেটাবেস তৈরী থাকে। তাই কোনো অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে অভিযুক্তকে শনাক্ত করার ক্ষেত্রে নতুন পরিকল্পনা কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারে। যাত্রীরাও এই ব্যবস্থা শুনে যথেষ্ট খুশি। এইভাবে ট্রেনের আসন বন্টন হলে অবাঞ্ছিত বিভিন্ন রকম ঘটনা এড়ানো যাবে বলে মনে করছেন যাত্রীরা। তবে এক্ষেত্রে যদি ট্রেনগুলিতে জেনারেল কোচের সংখ্যা কিছু বাড়ানো হয়, তাহলে যাত্রীদের সুবিধা হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। কারন সাধারণত যাত্রীআসনের তুলনায় কয়েকগুন বেশি যাত্রী সফর করে জেনারেল কোচগুলিতে।
रेलवे के जनरल डिब्बों में सीट की उपलब्धता के लिए बायो मैट्रिक सिस्टम लगाया गया है। इसमे पहले आओ, पहले पाओ के आधार पर यात्रियों को सीट दी जायेगी।
— Piyush Goyal (@PiyushGoyal) July 25, 2019
सामान्य कोच में सफर करने वाले यात्रियों को इस सिस्टम से काफी सुविधा होगी। मुम्बई से लखनऊ पुष्पक एक्सप्रेस में इसकी शुरुआत की गई है। pic.twitter.com/rruobTNsbx