আসলে, শিল্পী মানেই সৃজনশীল সৃষ্টির আড়ৎ, যা মস্তিষ্কে, চিন্তায়, মননে প্রতিফলিত হয়। নিজের সৃষ্টির মাধ্যমে শিল্পী তার সৃষ্টিশীলতার পরিচয় মেলে ধরেন। ঘটনা হল, কখনও সেই সৃষ্টি তার যথার্থ মূল্য পায়, কখনও পায়না। কিন্তু যে আসল শিল্পী, তার সৃষ্টি করার খিদে কিন্তু মেটে না। তাই বর্তমান সময়ে যদিও বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিল্পীর মর্যাদা দিয়ে তার সঠিক মূল্যায়ন করা হয় কোনো কোন জায়গায়, তবু একথা একেবারেই অস্বীকার করা যাবে না যে, বেশিরভাগ শিল্পীরাই কাজের যথার্থ মূল্যায়ন পান না।
কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প মেলা তাদের রোজগার যথেষ্ট পরিমানে বাড়িয়ে দিয়েছে। হরিদেবপুরের রবীনকুমার দে বছর সাতেক আগে দৈনিক মাত্র ৩৫ টাকা পেয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। আজ তিনি রীতিমতো একজন ব্যবসায়ী। বীরভূমের শ্যামলী দাস, পূর্ব মেদিনীপুরের সিরাজদৌল্লা প্রভৃতি প্রচুর শিল্পীরা এখন লাভের মুখ দেখেছেন, নিজেরা তাদের নিজেদের কাজে সাহায্য করার জন্য বেশ কিছু লোক ও নিযুক্ত করেছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি দফতরের আর্থিক সহায়তায় এবং প্রশিক্ষণের ফলেই এমন রদবদল সম্ভব হয়েছে। সারা বছরে বিভিন্ন মেলায় যোগ দিয়ে যে যায় হয়, তা দিয়ে এখন স্বচ্ছন্দেই চলে সকলের সংসার। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যেভাবে প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে রেখে নিজেদের শিল্পের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, তা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। শুরু হয়েছে এবছরের হস্তশিল্পমেলা। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ এবং বস্ত্র দফতরের উদ্যোগে আয়োজিত এই মেলায় বিভিন্ন জেলা থেকে অংশগ্রহণ করেছেন প্রায় ৬ হাজার শিল্পী। এদের মধ্যে মহিলা শিল্পীই প্রায় আড়াই হাজার জন। গত বছর এই মেলায় প্রায় ২৪ কোটি টাকার জিনিস বিক্রি হয়েছিল, এবছর ৩০ কোটি পর্যন্ত বিক্রির মূল্য পৌঁছতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।