"হে আমেরিকাবাসী ভগিনী ও ভ্রাতৃবৃন্দ, আজ আপনারা আমাদিগকে যে আন্তরিক ও সাদর অভ্যর্থনা করিয়াছেন, তাহার উত্তর দিবার জন্য উঠিতে গিয়া আমার হৃদয় অনিবর্চনীয় আনন্দে পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছে।"
অতীতে বহু কন্ঠ শুনেছিল আমেরিকা। কিন্তু প্রাচ্য দেশ থেকে আগত এক বজ্র কন্ঠের আন্তরিকতা যেন ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিল সে দেশের।
এমন বলিষ্ঠ কন্ঠে ভ্রাতৃত্বের ডাক আগে আসেনি। শুধুমাত্র একটি মাত্র শব্দবন্ধেই আপন করে নেওয়া এক প্রায় অচেনা ভূ-খন্ডকে। স্বামী বিবেকানন্দ হিন্দু ধর্ম প্রচারে যোগ দেন শিকাগোর হিন্দু মহা সভায়।
ভাষণের শুরুতেই তাঁর এমন সম্বোধনের পরেই টানা দু-মিনিট করতালি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা হল। সরকারী নথি অনুযায়ী সেদিন প্রায় ৭ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন সভাগৃহে।
পরদিন প্রাচ্য দেশ থেকে আগত গৈরিক সন্ন্যাসীর কথা লেখা হয়েছিল সব সংবাদপত্রে।
আজ থেকে ১২৮ বছর আগে আজকের দিনে। দিনটা ছিল ১৮৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর।
শিকাগোর হৃদয় জিতেছিলেন বীর সন্ন্যাসী। শতাব্দী পেরিয়েও সেই ভালোবাসা অবিচল। বিশ্ব ধর্ম সংসদ অনুষ্ঠিত হয়েছিল তৎকালীন 'পার্মানেন্ট মেমোরিয়াল আর্ট প্যালেস'এ। সেই ভবনের এখন নাম শিকাগো আর্ট ইনস্টিটিউট। সেই সিঁড়ির প্রতিটি ধাপ যেন সন্ন্যাসী-স্মরণিকা। ২০১২-র জানুয়ারিতে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হয় এই হল। সভায় উচ্চারিত বিবেকানন্দের ৪৭৩ টি শব্দ আলোক রেখায় লেখা আছে সিঁড়ির ধাপে ধাপে। যা শুরুই হয়েছে ‘সিস্টার্স অ্যান্ড ব্রাদার্স অফ অ্যামেরিকা...’ দিয়ে। ইন্সটিটিউটের সামনের রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দর নামে।