রাধা দামোদর মন্দিরের উপাস্য দেবতা দামোদরজী

বৃন্দাবনের শ্রী রাধা দামোদর মন্দিরে পূজিত হন রাধাকৃষ্ণ। মন্দিরের প্রধান উপাস্য দেবতা দামোদর, শ্রীকৃষ্ণেরই এক অবতার। ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে জীব গোস্বামী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রাচীন মন্দিরটি বৃন্দাবনের সেবা কুঞ্জে অবস্থিত ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে, ১৬৭০ সালে, যখন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব বৃন্দাবন আক্রমণ করেন, তখন আদি দেবতা রাধা-দামোদরকে কিছু সময়ের জন্য জয়পুরে স্থানান্তরিত করা হয়। যখন সামাজিক পরিস্থিতি অনুকূল হয়, তখন ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে দেবতাদের বৃন্দাবনে ফিরিয়ে আনা হয়। তারপর থেকে আবার মন্দিরে নিয়মিত পুজো শুরু হয়। ১৫৯৬ সালে জীব গোস্বামীর অন্তর্ধানের আগে, তিনি তাঁর উত্তরসূরি প্রধান পুরোহিত কৃষ্ণ দাসকে দেবতাদের দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বর্তমান সময় কৃষ্ণদাসের বংশধররাই দেবতাদের সেবা করছেন।

radha damodar



বৃন্দাবনের সাতটি উল্লেখযোগ্য মন্দির রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল শ্রী রাধা দামোদর মন্দির। বাকি মন্দিরগুলির নাম রাধা মদন মোহন মন্দির, রাধা গোকুলনন্দ মন্দির, রাধা রমন মন্দির, রাধা গোবিন্দ মন্দির, রাধা গোপীনাথ মন্দির এবং রাধা শ্যামসুন্দর মন্দির। মন্দিরটিতে গিরিরাজ শিলাও রয়েছে। শিলাখন্ডে রয়েছে কৃষ্ণের পায়ের ছাপ। লোকবিশ্বাস কৃষ্ণ স্বয়ং সনাতন গোস্বামীকে দিয়েছিলেন এই পদ চিহ্ন দিয়েছিলেন। ভক্তদের বিশ্বাস অনুসারে, রাধা দামোদর মন্দিরের চার পরিক্রমা গোবর্ধন পর্বত পরিক্রমার সমান। মন্দির প্রাঙ্গণে রূপা গোস্বামী সমাধি এবং জীব গোস্বামী সমাধি সহ অনেক গৌড়ীয় সাধকের সমাধিও রয়েছে। ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা, স্বামী প্রভুপাদ কৃষ্ণ সম্পর্কে প্রচারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে ছয় বছর এই মন্দিরে কাটিয়ে ছিলেন।

মন্দিরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে দিনে পাঁচবার ভোগ পরিবেশন করা হয়। প্রত্যেক বছর শারদ পূর্ণিমা, গোবর্ধন পুজো, গোপাষ্ঠমী, হোলি, শ্রীগৌড় পূর্ণিমা, চন্দনযাত্রা, শ্রী রাধা দামোদর উৎসব ছাড়াও বহু ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয় এই মন্দিরে। এই সময় বহু ভক্তের সমাগম হয় মন্দিরে প্রত্যেক দিন সকাল ৬:৩০ থেকে বেলা ১২:৩০ পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে। গ্ৰীষ্মকালে বিকেল ৫ঃ০০ থেকে ৭:৩০। শীতকালে ৪:১৫ থেকে ৮:০০ পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...