হিন্দু বাঙালি জাতির জীবনে আর যা কিছুরই কমতি থাকুক না কেন, ঠাকুর দেবতার অভাব নেই। ৩৩ কোটি দেব-দেবী কথাটা এখন সংশোধন করাই শ্রেয়, কারণ মাঝে মধ্যেই যেভাবে ‘বিশ্বাস ভিত্তিক’ একাধিক ঠাকুরের আবির্ভাব ঘটে, তাতে এই সংখ্যা এদ্দিনে গেছে ছাড়িয়ে। ভালোয়–মন্দে, সুখে-দুঃখে মানুষের মনে একটা অদ্ভুত বিশ্বাস কাজ করে এবং কাজ করে এক সমর্পনের মনোভাব। কোনো যুক্তি-বিজ্ঞান দিয়ে যা বিচার করা যাবে না - কারণ সেখানে তার প্রবেশ নিষেধ । তা সে যাই হোক, ৩৩ কোটির তালিকায় আরো একটি নবতম সংযোজন - যা কিনা একেবারে সময়োপযোগী, অত্যাধুনিক – নাম শুনে একটু চমক লাগতেই পারে। কিন্তু এই পুজোর মরশুমে তার রমরমাও নেহাত কম নয়, অন্যদেবতারা একটু হলেও এনার প্রভাবে পিছিয়ে পড়েছেন। ইনি হলেন ‘টেনশন’ ঠাকুর। নাম না শুনলেও ইনি কিন্তু বেশ কার্যকরী ও পূজাও পাচ্ছেন।
না না- পৌরাণিক ব্যাখ্যা, লোকগাথা কিছুতেই এনার উল্লেখ পাবেন না। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে জলাভূমির পাশে বেদির উপর অধিষ্ঠিত তিনি। মূর্তির নির্মাতা অজানা। লাল একটি বেদি অব্দি মুখ তার। রীতিমতো উৎসব করে পূজিত হন প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তিতে। বয়েসে বেশ নবীন, মোটে তিন-চার বছর হলো শুরু হয়েছে তার পুজো। এছাড়া নিত্যসেবা তো আছেই। টেনশন এমন এক জিনিস তা আপনি চান বা না চান, সে আপনার নিত্য সঙ্গী। তাই ইনিও আছেন সেই টেনশন ভাগ করে নিতে।
গ্রামবাসীর কথায়, টেনশনের শেষ নেই জীবনে। অন্যান্য বিপদের জন্য এতদিন নানা দেবতা থাকলেও টেনশন ভাগ করতে কেউ ছিল না। সে কারণেই এনার প্রতিষ্ঠা। তাদের কথায় এই ঠাকুরের কৃপায় না কি কেটেও যাচ্ছে টেনশন, কমছে দুশ্চিন্তা। এক্সপেরিয়েন্স কম হলেও এই ঠাকুর কিন্তু ভক্তদের মধ্যেই ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাই এতদিন তো নানা দেবীর পুজো করলেন , সুপারফাস্ট একশনের জন্য এই নবীন দেবতার শরণ নিতেই পারেন - ফল হয়তো সত্বর পেলেও পেতে পারেন। কারণ যে হারে টেনশন বেড়ে চলেছে তাতে ভক্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে , বাড়ছে ওয়েটিং লিস্ট । তাই দেরি নয় এগিয়ে চলুন আর সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলুন নতুন দেবতার । কে বলতে পারে আপনার ভালো থাকার রহস্য হয়তো বা এনার কাছেই আছে।