আজ শ্রাবণ মাসের শুক্ল পঞ্চমী। এই দিনটি সারা ভারতবর্ষে নাগপঞ্চমী রূপে উদযাপিত করা হয়। অনেকের বিশ্বাস সংসারের সমৃদ্ধির জন্য এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। শোনা যায় এই দিন ভক্তরা নিজেদের আর্থিক আনুকূল্য লাভের আশায় মহাদেবকে তুষ্ট করেন পূজার মধ্যে দিয়ে। ভক্তদের ভিড় জমে মহাদেবের নানা মন্দিরে। মহাদেবের বহু পীঠ বর্তমান। তবে ভারতের মধ্যপ্রদেশের অন্তর্গত উজ্জয়িনীর নাগচন্দ্রেশ্বর মন্দিরের মাহাত্যই আলাদা। এই মন্দিরটি বছরে একদিন মাত্র খোলা হয়।
উজ্জয়িনীর নাগচন্দ্রেশ্বর মন্দিরের দরজা খোলে শুধুমাত্র নাগপঞ্চমীর দিনেই। এই দিনেই এখানে আয়োজিত হয় নাগপঞ্চমীর পূজা।এছাড়া বছরের অন্যান্য দিনে এই মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। এই মন্দিরটি উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দিরের পাঁচটি তলের মধ্যে তৃতীয় তলে অবস্থিত। প্রতি বছর নাগ পঞ্চমীর দিনে শিবকে পূজা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এখানে প্রায় ২ লাখ ভক্ত এসে উপস্থিত হয়।
পৌরাণিক মতে, নাগরাজ তক্ষক মহাদেবকে সন্তুষ্ট করতে বহু বছর তপস্যা করেছিলেন। আর তাঁর আরাধনায় তূষ্ট হয়ে শিব নাগরাজ তক্ষককে বর দেন। তারপর থেকে তক্ষক শিবের সঙ্গে থাকতেন। এই মন্দিরে মূর্তির মধ্যে দেখা যায় মহাদেব তাঁর স্ত্রী পার্বতী ও পুত্র গনেশের সাথে বসে আছেন আর তাঁদের ঘিরে ছত্রাকারে বিরাজ করে আছেন নাগরাজ। এই মূর্তি একবার দেখার জন্যেই দর্শনার্থীরা প্রতি বছর এখানে এসে থাকেন। তাঁদের সকলের বিশ্বাস নাগপঞ্চমীর শুভ তিথিতে স্বয়ং নাগরাজ, নাগচন্দ্রেশ্বর মন্দিরে এসে উপস্থিত হন এবং সকল ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। এই প্রাচীন মন্দিরের আরো একটি বিশেষত্ব হল শিবের নাগশয্যা। আমরা কেবলমাত্র ভগবান বিষ্ণুর নাগশয্যার মূর্তি দেখেছি। একমাত্র মহাকাশ্বরের নাগচন্দ্রেশ্বরের মন্দিরে নাগপঞ্চমীর দিন গেলেই মহাদেবের এই বিরূপ মূর্তির দর্শন পাওয়া সম্ভব।