শিক্ষক দিবসে আমরা প্রথম রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করি। কিন্তু জানেন কী? আরও একজন শিক্ষক আছেন যাকে স্মরণ করা হয় এই দিনে।
হাইলাইটসঃ
১। শিক্ষক ছকড়ি মজুমদার কে?
২। তিনি কোন স্কুলের শিক্ষক ছিলেন?
৩। তার স্কুলের সাথে ব্রতচারী আন্দোলনের কী সম্পর্ক?
এই শিক্ষক মহাশয়ের নাম ছকড়ি মজুমদার। শিক্ষক দিবসে সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছকড়ি মজুমদারকেও স্মরণ করা হয় পাড়ুইয়ের অবিনাশপুর শ্রীরাম হাইস্কুলে।
শিক্ষক ছকড়ি মজুমদার আমোদপুর সংলগ্ন সাঙ্গুলডিহি গ্রামে ১৮৯৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর মানভূমের পাণ্ড্রারাজ হাই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ১৯১৭ সালে। ১৯২৭ সালে তিনি অবিনাশপুর শ্রীরাম উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এই স্কুলে ছিল সুলতানপুরের জমিদার শিক্ষানুরাগী অবিনাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিষ্ঠিত।
এই স্কুল তার শিক্ষক জীবনের এক অন্যতম উদ্দ্যেশ্য হয়ে উঠেছিল। জমিদারের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি স্কুলটিকে আদর্শ বিদ্যালয় হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন। স্কুলের ছাত্ররা শুধুমাত্র পড়াশোনার ঘেরাটোপে আটকে ছিল না, সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি আরও শিল্পমূলক কাজ শেখান হত। তাঁত, লোহা, কাঠ, কৃষি-সহ বিভিন্ন বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং সামগ্রী উৎপাদন করা হত এখানে। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর মন্ত্রিসভার তদানীন্তন শিক্ষাসচিব ওই স্কুলের কথা জানতে পেরে ১৯৬১ সালে পরিদর্শনে আসেন। তার পরেই জাতীয় পুরস্কারের জন্য ছকড়ি মজুমদারকে মনোনীত করা হয়। রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের হাত থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনিই হন জেলার প্রথম জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক।
আজও শুধুমাত্র শিক্ষক দিবসই নয়, স্কুলের প্রতিটি অনুষ্ঠানে তাঁর অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। তাঁর ভাইপো তথা ছাত্র ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক সুনীল মজুমদার বলেন, ‘‘উনি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক। তাই তাঁকে আচার্যদেব বলা হত। তাঁর সাহায্যে বহু দুঃস্থ ছাত্রছাত্রী প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।’’
এই স্কুল পরিদর্শনে ব্রতচারীর প্রবর্তক তদানীন্তন জেলাশাসক গুরুসদয় দত্তও এসেছিলেন। স্কুলের পরিবেশ তাকে বিস্মিত ও মুগ্ধ করে তোলে। তাঁরই প্রেরণায় স্কুলে গড়ে ওঠে ব্রতচারী দল। মনে করা হয় ওই স্কুলেই জেলায় ব্রতচারী আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল।