১৮৯৮ সালের ২৩ জুলাই, আজকের দিনে বীরভুমের লাভপুরে জন্মগ্রহণ করেন সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। লাভপুর ও লাল-মাটির বাংলা বারবারই তাঁর লেখায় অন্য মাত্রা পেয়েছে। প্রায় ৬৫টি উপন্যাস, ৫৩টি গল্পগ্রন্থ, ১২টি নাটক, ৪টি প্রবন্ধের বই, ৪টি আত্মজীবনী-মূলক বই ও ২টি ভ্রমণের বই রচনা করেন তিনি। ১৯৬৬ সালে তাঁর অন্যন্য গ্রন্থ ‘গণদেবতা’র জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি পদ্মশ্রী ও ১৯৬৯ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও সাহিত্য আকাদেমি ও রবীন্দ্র পুরস্কারেও ভূষিত হন তিনি।
তারাশঙ্করের উপন্যাস, গল্প ও নাটক নিয়ে চল্লিশটিরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সেগুলির মধ্যে বাংলা ছবির ধারক হিসেবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘জলসাঘর’ (১৯৫৮ খ্রিঃ) ও ‘অভিযান’(১৯৬২) , পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘অগ্রদানী’ (১৯৮৩), অসিত সেন পরিচালিত ‘আগুন’ (১৯৬২), বিজয় বসু পরিচালিত ‘আরোগ্য নিকেতন’ (১৯৬৯), অগ্রদূতের ‘উত্তরায়ণ’ ( ১৯৬৩), দেবকী বসু’র ‘কবি’ ( ১৯৪৯), তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘গণদেবতা’, (১৯৭৯), তপন সিংহ পরিচালিত ‘হাঁসুলীবাঁকের উপকথা’ (১৯৬২) প্রভৃতি নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য।
বিশ শতকের তিনের দশকের অন্যান্য সাহিত্যিকদের মধ্যে তারাশঙ্কর বরাবরই অনন্য। অন্য দুই বন্দ্যোপাধ্যায় মানিক ও বিভূতিভূষণের সাহিত্যে যখন ধরা দিয়েছে রিরংসা ও প্রকৃতি, তারাশঙ্কর মানবিক সম্পর্ক ও প্রকৃতির সাথে সম্পর্ককেই গুরুত্ব দিয়েছেন সেখানে। লাল মাটি থেকে উঠে আসা তাঁর সাহিত্যের রঙও লাল। তাই তাঁর চরিত্ররা প্রশ্ন করে, জীবন এত ছোট কেন? জীবনকে নানা দিক থেকে দেখেছেন তিনি। দেখেছেন এই বিপুলা দুনিয়াকেও।
এ সময়ের কবি শুভজিৎ গুপ্তের ভাষায়, “অন্ত্যজ মানুষের কামনা বাসনাকে অনন্য মাত্রা দিয়েছেন । বাংলা গদ্য সাহিত্যের ভাষাকে নতুন প্রবাহধারা দিয়েছিলেন তিনি।”