আমাদের দেশের রেলের সুরক্ষা নিয়ে বারংবার আমাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। প্রতিটি বাজেটেই রেলের জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বেশ কিছু অর্থ, তৈরী হচ্ছে বেশ কিছু প্রকল্প, বাড়ানো হচ্ছে ট্রেনের সংখ্যা, আসছে দ্রুততম ট্রেন, ঢেলে সাজানো হচ্ছে স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম, খাবার নিয়েও হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, কিন্তু তবু রেলের যাত্রী সুরক্ষা কিন্তু যে তিমিরে-সেই তিমিরেই। সেখানেও বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে কিন্তু তেমন প্রভাব ফেলছেনা কোনো কিছুই। নাশকতা, ট্রেন দুর্ঘটনা যেমন ছিল তেমনি রয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি রেলে স্বচ্ছ অভিযান চালানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হল। আবার একরকম পরীক্ষা ব্যবস্থা শুরু হতে চলেছে ভারতীয় রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে। অন্তত ২০ মিনিট আগে পৌঁছতে হবে স্টেশনে নইলে আপনার যাত্রা বানচাল হয়ে যেতে পারে। বিমানবন্দরের মত আঁটোসাঁটো সুরক্ষা ব্যবস্থা করার লক্ষ্যেই মূলতঃ এগোতে চাইছে রেল-এমনটাই জানা গিয়েছে।
কিভাবে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে আরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল অরুন কুমার জানালেন, তাঁরা প্রধানতঃ রেলওয়ে স্টেশন 'সিল' বা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রেল স্টেশনে ঢোকার কতগুলো পথ রয়েছে, তা প্রথমে দেখে নিয়ে তার মধ্যে কোন কোনগুলোকে সিল করা সম্ভব, সেগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। কিছু অংশকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিছু প্রবেশপথে বসানো হবে কোলাপসিপল গেট। বাকিগুলোতে মোতায়েন করা হবে পর্যাপ্ত পরিমানে আরপিএফ পার্সোনাল। এই আরপিএফ পার্সোনাল যেই দিকে থাকবেন, সেই দিক দিয়েই সিকিউরিটি চেক করা হবে। তাই প্রত্যেকে যদি অন্ততঃপক্ষে ১৫-২০ মিনিট আগে স্টেশনে আসেন, তাহলে সিকিউরিটি চেকিং-এর কারনে ট্রেন মিস করবেন না। নয়তো চেকিং-এর জন্যই ট্রেন মিস হয়ে যেতে পারে।
আসন্ন কুম্ভ মেলা উপলক্ষ্যেই এই সিস্টেম এখন চালু হচ্ছে। এলাহাবাদ স্টেশনে চালু হচ্ছে এই নয়া সিকিউরিটি ব্যবস্থা। একই সঙ্গে কর্ণাটকের হুবলি রেলওয়ে স্টেশনেও যাত্রী সুরক্ষায় এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আগামী দিনে সারা দেশেই এই ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর। ইন্টিগ্রাল সিকিউরিটি সিস্টেম-এর আওতায় এই ব্যবস্থা কার্যকর করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় স্টেশনের প্রবেশ পথ থেকে ট্রেনে ওঠার আগে পর্যন্ত যাত্রীদের সিকিউরিটি চেকিং, মালপত্রের পরীক্ষা, সিসিটিভি ক্যামেরা, বোম্ব ডিটেকশনের মত একাধিক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। থাকছে ফেস রেকগনিশনের মত ব্যবস্থাও। এইভাবে বিভিন্ন পর্যায়ক্রমে চেকিং-এর মাধ্যমে এগোতে হবে প্রত্যেক যাত্রীদের। তারপর তাঁরা ট্রেনে উঠে নিজের আসনে বসতে পারবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, কুম্ভ মেলায় যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা তো বটেই, সকলেই তৈরী থাকুন আগামীদিনে রেলের এইরকম সিকিউরিটি চেকিং-এর জন্য।