বরিশালের গর্ব: গুঠিয়ার সন্দেশ

আজ আলাপ হবে এমন একজনের সাথে যে বয়সে নবীন হলেও ইতিমধ্যেই ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডার’ তকমা পেয়েছে। আর তার সাক্ষাৎ মিলবে বাংলাদেশের বরিশাল সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে বানারীপাড়া উপজেলার গুঠিয়ায়। কিন্তু তার সাফল্যের পিছনে অবদান কিন্তু এই বাংলার। কীভাবে? বলবো সে কথাই। সে কে?
                                
  বলছি বরিশালের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডার ‘গুঠিয়ার সন্দেশের‘ কথা। বরিশালে এসে গুঠিয়ার সন্দেশ খাবেন না তা কী করে হয়? কিন্তু খাবেন কেন? কি এর বিশেষত্ব! সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে একটু এর জন্মবৃত্তান্ত জানা যাক।
                            
 ১৯৬২ সালে প্রথম এই সন্দেশ তৈরী করেন ময়রা সতীশচন্দ্র দাশ। যদিও তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলা থেকে এই সন্দেশ তৈরীর কৌশল শিখে তার সাথে নিজের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে এই সন্দেশ প্রস্তুত করেন বাংলাদেশের গুঠিয়ায়। এর অনন্য স্বাদের কারণেই অতি স্বল্প সময়েই খ্যাতি অর্জন করে মানে এখনকার প্রচলিত কথায় ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়।

গুঠিয়ায় উৎপত্তি বলে এটি ‘গুঠিয়ার সন্দেশ’ নামেই পরিচিত। আর সেই কৌশলে সে আজও সমানভাবে জনপ্রিয়। সতীশচন্দ্র বহু বছর আগে কলকাতায় চলে যান এবং সেখানেই মারা যান। এখন সতীশচন্দ্রের ভ্রাতষ্পুত্র পরিমল চন্দ্র সন্দেশের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
                                 
এবার আসি কৌশলে। সাধারণত ৬/৭ কেজি দুধ থেকে ১ কেজি ছানা পাওয়া যায়। এরপর ১ কেজি ছানার সঙ্গে ১ কেজি চিনি মিশিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পাক দিয়ে অল্প আঁচে ৫ মিনিট রাখলেই সন্দেশের অনুপান তৈরি। তারপর একটু ঠান্ডা হলে পরিমাণ মতো নিয়ে কাঠের বাটার উপরে রেখে সন্দেশের আকার দেওয়া হয়। সৌন্দর্যের জন্য সন্দেশের উপর বসানো হয় কিসমিস।

পরিমাণ মতো আঁচ ও মিশ্রণের পাকই এই সন্দেশ তৈরির মূল কথা। বর্তমান পরিস্থিতি ও চাহিদার মেলবন্ধনে দামের হয়েছে হেরফের - বর্তমানে প্রতি কেজি (২৫টি) সন্দেশের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তারপরও কিন্তু স্বাদের কারণেই গুঠিয়ার সন্দেশের চাহিদায় টান পড়েনি।
                             
শীতকালে এবং বৈশাখে সন্দেশের চাহিদা বাড়ে। খাঁটি ছানা ও চিনির মেলবন্ধনে অনবদ্য স্বাদের এই 'ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডার' বিদেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই অনবদ্য স্বাদ চেখে দেখতে হলে অনলাইনের শরণাপন্ন হতেই হবে, নাহলে প্রণালী তো জানাই গেল...বানিয়ে একটু দেখা যেতেই পারে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...