সারোগেসি বিল (রেগুলেশন), ২০১৯ সম্পর্কে ১৫টি বড় সুপারিশ করেছে রাজ্যসভার ২৩ সদস্যের এক সংসদীয় কমিটি। তার মধ্যে অন্যতম সুপারিশ হল শুধুমাত্র নিকট আত্মীয়ই নন, 'ইচ্ছুক' যে কোনও মহিলাকেই সারোগেট মা হওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। এছাড়াও বলা হয়েছে, সারোগেসিতে যাওয়ার আগে কোনও মহিলা গর্ভধারণে অক্ষম তা বোঝানোর জন্য বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ বছর অপেক্ষা করার নির্দেশ ছিল। কিন্তু কমিটির রিপোর্টে ওই নিয়ম প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে।
ওই কমিটিতে বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি শব্দের সংজ্ঞাটিকেই বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় প্যানেল মনে করে, সন্তান কামনা করছেন, এমন দম্পতির কাছে পাঁচ বছর সময়টি যথেষ্ট দীর্ঘ। তাই কমিটি চায় এই অংশটি বাদ দেওয়া হোক। তার বদলে চিকিৎসাশাস্ত্রের কয়েকটি বিষয় তাঁরা যুক্ত করার পক্ষে রায় দিয়েছেন। যেমন জন্মের সময় থেকেই ইউটেরাস না থাকা, ইউটেরাসে টিউমারজাতীয় কোনও মাংসপিন্ড তৈরী হওয়া ইত্যাদি। বন্ধ্যাত্ব বাদ দিয়ে যদি তার বদলে ডাক্তার এমন শংসাপত্র দেন, যে কোনও একজন মহিলার পক্ষে সন্তান ধারণ করা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রেও সেই মহিলা এই সুবিধা নিতে পারবেন।
কমিটির অন্যতম সুপারিশ হল, ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী বিবাহ বিচ্ছিন্না অথবা বিধবা ভারতীয় সিঙ্গল মহিলাদেরও সারোগেসির সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। নিকট আত্মীয়ের মধ্যে এই ব্যাপারটি সীমাবদ্ধ করে দিলে সারোগেট মা পাওয়ার সুযোগ কমে যাবে। তার ফলে যাঁরা সত্যিই মা হতে ইচ্ছুক, তাঁরা অসুবিধের মধ্যে পড়বেন। সারোগেট মা -কে প্রদেয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার মেয়াদ ১৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ৩৬ মাস করার সুপারিশও করা হয়েছে। সারোগেসির ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর স্বার্থ সুরক্ষিত করার ওপরেও জোর দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। তাদের সুপারিশে বলা হয়েছে, সদ্যোজাত শিশুর মা-বাবা ও অভিভাবকত্ব নিয়ে নির্দেশিকা দেবেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট, যা শিশুর জন্মসংক্রান্ত হলফনামা বলে বিবেচিত হবে।
উল্লেখ্য, সারোগেসি (রেগুলেশন) বিল, ২০১৯ এখনও রাজ্যসভায় পাশ হয়নি। এই কমিটির চেয়ারম্যান ভূপিন্দর যাদব বুধবার এই রিপোর্টটি পেশ করেন। গত ২১ নভেম্বর বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠিয়েছিল রাজ্যসভা। তার পর থেকে কমিটি এই বিষয়ে মোট ১০টি বৈঠক করে। কমিটি চাইছে, সারোগেসির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিতে উপযুক্ত বোর্ড তৈরী হোক, যাদের কাছে এই ধরণের ক্লিনিক সংক্রান্ত সব তথ্য থাকবে, সেই বোর্ডই নিয়ামকের কাজ করবে।