বিশ্বের সর্ববৃহৎ অফিসের তকমা এতদিন ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতর পেন্টাগনের দখলে। এবার সেই খেতাবের দাবীদার হল গুজরাটের সুরাটের ডায়মন্ড বোর্স। রবিবার গুজরাটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগন এখন দ্বিতীয় স্থানে।
গুজরাটের এই অফিস প্রসঙ্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন, 'গত ৮০ বছর ধরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অফিস ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগন। কিন্তু, সেই তকমা এবার ভারতের ঝুলিতে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ অফিস এবার সুরাট ডায়মন্ড বোর্স।
বিশ্বের ৯০ শতাংশ হিরে তৈরির কাজ হয় গুজরাটের সুরাট শহরেই। আকাশভেদী এই ভবনেই এবার থেকে হীরে শিল্পের সঙ্গে জড়িত যাবতীয় সংস্থার অফিস বসবে। সুরাট ডায়মন্ড বোর্স হবে আন্তর্জাতিক হীরা ও জুয়েলারি ব্যবসার জন্য বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে আধুনিক কেন্দ্র। এই বোর্সে থাকবে আমদানি-রপ্তানির জন্য অত্যাধুনিক কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স হাউস, খুচরা জুয়েলারি ব্যবসার জন্য জুয়েলারি মল এবং আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও নিরাপদ ভল্টের জন্য বিশেষ সুবিধা।
সুরাটের ড্রিম (ডায়মন্ড রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেন্টাইল) সিটিতে ৬৬ লাখ বর্গফুট জায়গার ওপর এই ডায়মন্ড বোর্স নির্মিত হয়েছে। দিল্লির সংস্থা মরফোজেনেসিস এই ভবনের নকশা করেছে। মরফোজেনেসিস গান্ধীনগরের গিফট সিটি ও আহমেদাবাদের জয়দাস করপোরেট পার্কেরও নকশা করেছে।
সুরাট ডায়মন্ড বোর্সে ৩০০ থেকে ৭ হাজার ৫০০ বর্গফুটের প্রায় ৪ হাজার ২০০টি অফিস আছে। ৯টি টাওয়ার আছে, প্রতিটিতে গ্রাউন্ড প্লাসসহ ১৫টি ফ্লোর আছে।
হীরে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলি এই অফিস স্পেসে আগামীদিনে বসতে চলেছে। তালিকায় রয়েছে রাফ ডায়মন্ড, পলিশ ডায়মন্ড, হীরে উৎপাদনকারী মেশিন, সফটওয়্য়ার, ডায়মন্ড সার্টিফিকেশন ফার্ম, ল্যাবে তৈরি হীরের একাধিক ছোট-বড় সংস্থা।
এ ছাড়া সুরাট ডায়মন্ড বোর্সে দেশি ও বিদেশি ক্রেতাদের জন্য হীরার গয়নার ২৭টি খুচরা আউটলেটও খোলা হবে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য ভবনটির ভেতর ও বাইরে চার হাজারেরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সদস্য বলেছেন, এই ভবনের কর্মীদের বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়া হবে। এতে তাঁরা কেবল হাত দেখিয়েই কমপ্লেক্সে ঢুকতে পারবেন।
২০১৭ সালে এই ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। মহামারির বছর থাকা সত্ত্বেও মাত্র পাঁচ বছরে নির্মাণকাজ শেষ হয়। ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। জানা গিয়েছে মোট দেড় লাখ কর্মীর চাকরি হবে বিশ্বের বৃহত্তম এই অফিসে।
কোর কমিটির এক সদস্য বলেছেন, কমপ্লেক্সটি ‘পঞ্চতত্ত্ব’ (বাতাস, জল, আগুন, পৃথিবী ও আকাশ) থিমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।