রোব্বার হল বাঙালির কব্জি ডুবিয়ে হাওয়ার দিন। বাতাসে বসন্তের হাওয়া জাগিয়ে তোলে ছুটের দিনে খিদে-খিদে উসখুশে ভাব। সারা সপ্তাহ ধরে তার জন্যই তাকিয়ে থাকা রবিবারের দিকে। মাটন-মাটন মন। মাটনের যতরকম পদ খাওয়া হোক বাটা মশলা দিয়ে খাসির মাংসের স্বাদ গন্ধের সঙ্গে কোনও কিছুরই তুলনা হবে না। এপার বাংলা আর ওপার বাংলার দুই বিখ্যাত মাটন রেসিপির খোঁজ রইল আজকের নিবন্ধে।
বাটা মশলার খাসির ঝোল
বাটা মশলার স্বাদই আলাদা- এ শুধু কথার কথা নয় ঘোর বাস্তব। যতই গুঁড়ো মশলা আর মিক্সি-গ্রাইন্ডার থাকুক তবু শিল নোড়ায় বাটা মশলা রান্নার স্বাদকে আকাশ-পাতাল বদলে দেয়। এপার বাংলার বাটা মশলা দিয়ে রাঁধা খাসির ঝোল এক দারুণ ব্যাপার! সেই অভিজ্ঞতা কোনওভাবেই মিস করা যায় না
কী কী লাগবে
মাটন- ১ কেজি
আলু- ৪ মাঝারি( অর্ধেক করে কাটা)
পেঁয়াজ- ২ (বড়)
টমেটো- ২ (মাঝারি মাপের)
রসুন- ১০ কোয়া
আদা বাটা- ২ চামচ
টক দই – ১০০ গ্রাম
গোটা গরম মশলা- (৩ এলাচ/ ৩ লবঙ্গ/ ১ স্টিক দারুচিনি)
তেজপাতা- ২
হলুদ বাটা- ২ চামচ
লঙ্কা বাটা- ১ চামচ
ধনে বাটা- ২ চামচ
জিরে বাটা- ২ চামচ
গরম মশলা বাটা- ১ চামচ (শুকনো)
সরষের তেল- প্রয়োজন মতো
নুন- স্বাদ মতো
চিনি- স্বাদ মতো
কীভাবে বানাবেন
মাটনের মধ্যে টক দই, নুন, আর লঙ্কা-হুদ-জিরে-ধনে বাটার অর্ধেকটা দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন। যদি আগের দিন রাত থেকে করে রাখতে পারেন সবচেয়ে ভাল আর নাহলে রান্নার অন্তত ৪-৫ ঘন্টা আগে।
গোটা গরম মশলা, গোলমরিচ আর একটা শুকনো লঙ্কা শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়িয়ে নিন।
কড়াইতে তেল গরম করে তেজপাতা আর গোটা গরমমশলা আর সামান্য চিনি ফোড়ন দিন। মশলার গন্ধ বেরতে শুরু করলে কুচি করে কাটা পেঁয়াজ দিন। পেঁয়াজে গোলাপি রং ধরলে সমস্ত বাটা মশলা দিন। যতক্ষণ না মশলা থেকে তেল বের হয় মশলা ভাজতে থাকুন। মশলা তেল ছাড়লে ম্যারিনেট করা মাংস কড়াইতে দিন। কষাতে থাকুন। মাংস ভাজা ভাজা হলে প্রেশারকুকারে দিন। সঙ্গে আলু। যতটা প্রয়োজন জল দিন। কাঁচা জল দেবেন না, গরম জল দিন। প্রেশার কুকারে ১০-১২ হুইসেল দিন। ১০ মিনিট স্ট্যাডিং টাইম। কুকার ঠান্ডা হলে ঢাকা খুলে দেখুন মাংস সেদ্ধ হয়েছি কি না। মাংস নরম হয়ে এলে গুঁড়ো গরম মশলা ছড়িয়ে দিন। অনেকে সামান্য ঘি দেন, আপনি চাইলে নাও দিতে পারেন।
গোটা রসুনের মাটন
বাংলাদেশের খুলনার বিখ্যাত পদ এটি। রগরগে মাংসের মধ্যে তাকিয়ে থাকা গোটা গোটা রসুন, এই পদের বিশেষত্ব।
কী কী লাগবে
মাটন- ১ কেজি
পেঁয়াজ বাটা- ২ (বড়)
রসুন- গোটা ২টি (মাঝারি)
রসুন বাটা- ১ চামচ
আদা বাটা- ১ চামচ
টমেটো-১
গোটা গরম মশলা- ( ৩ ছোট এলাচ/ ১ বড় এলাচ/ ২ লবঙ্গ/ ১ স্টিক দারুচিনি)
তেজপাতা- ২
হলুদ বাটা- ২ চামচ
লঙ্কা বাটা- ১ চামচ
ধনে বাটা- ২ চামচ
জিরে বাটা- ২ চামচ
গরম মশলা বাটা- ১ চামচ (শুকনো)
সরষের তেল- আধ কাপ
ঘি- প্রয়োজন মতো
নুন- স্বাদ মতো
চিনি- স্বাদ মতো
কীভাবে রাঁধবেন
খাসির মাংস ভালো করে ধুয়ে সরষের তেল, লঙ্কাগুঁড়ো, হলুদগুঁড়ো, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা, জিরে গুঁড়ো, সব মিশিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন অন্তত ২ ঘন্টা। কড়াইতে সরষের তেল দিন। তেল গরম হলে তেজপাতা আর শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। গন্ধ বেরলে মাংস দিন। দমে বসিয়ে রান্না করুন। মাংস অর্ধেক সেদ্ধ হয়ে এলে গোটা রসুনগুলো দিন। পুরো সেদ্ধ হয়ে এলে কাঁচা লঙ্কা আর ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। ভাত বা রুটি দিয়ে এই মাংস খাওয়ার সময় গোটা রসুনগুলি ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে খেতে হয়, এটাই পদের মজা।