গ্রীষ্মের বাঙালি রান্নাঃ ঝিঙে শুক্তো ও লাউ-উচ্ছে ডাল

গরম এড়াতে চিকিৎসকরা বলছেন ‘হালকা খান’। তেলমশলা থেকে যত দূরে থাকা যায় এই প্রবল গরমে ততই ভাল থাকবে শরীর। বাঙালি হেঁশেলে গরমে ভাল থাকার উপায় কিছু কম নেই। কম তেলমশলার এই সব রান্না স্বাদেও ভাল, আরামও দেয়। তেমনি কয়েকটি পদের রেসিপি দেওয়া হল এই নিবন্ধে

ঝিঙে শুক্তো

কী কী লাগবে

ঝিঙে- ৫

উচ্ছে- ২

পোস্ত বাটা- ২ চা চামচ

চিনি- স্বাদমতো

বড়ি- ৪-৫ টা

তেজপাতা- ১ টা

পাঁচফোড়ন- ১/২ চা চামচ

সরষে- ফোড়ন দেওয়ার জন্য

আদা বাটা- ১ চা চামচ

কীভাবে রান্না করবেন  

প্রথমে ঝিঙের খোসা ছাড়িয়ে চাকা চাকা করে কেটে রাখুন। উচ্ছেগুলোও কাটুন। হালকা ভেজে নিন। এরপর কড়াই চাপিয়ে তেল দিন। বেরলে ঝিঙ্গে দিন। সামান্য নুন দিয়ে ঢাকা দিন। জল বেরিয়ে সেদ্ধ হয়ে এলে ভেজে রাখা উচ্ছেগুলো দিন। আরও এক কাপ জল দিন। জল ফুটতে থাকলে পোস্ত বাটা, চিনি দিয়ে নাড়াচাড়া করে কষে নিন। ঝিঙে সেদ্ধ হলে ভাজা বড়ি দিয়ে অন্য একটা কড়াই চাপিয়ে তেল ঢেলে তেজপাতা, ফোড়ন ও সরষে দিয়ে সম্বর দিয়ে দিন। এরপর তরকারি ছেড়ে দিয়ে সবশেষে আদা বাটা দিয়ে নামিয়ে নিন।

লাউ শুক্তো

কী কী লাগবে

লাউ- ১

উচ্ছে– ৪

রাঁধুনি ফোড়ন– ১ ছোটো চামচ

সর্ষের তেল–  ২ বড় চামচ

তেজপাতা– ১

নুন – স্বাদ অনুযায়ী

চিনি–  ১ ছোটো চামচ

সর্ষে বাটা–  ১ চামচ

দুধ– অল্প

ঘি–  ১ ছোটো চামচ

ভাজা বড়ি–  পরিমাণ মতো

কীভাবে রান্না করবেন  

লাউ শুক্তো রান্নার জন্য প্রথমে লাউ ঝিরি ঝিরি করে কুচিয়ে নিতে হবে। উচ্ছে চাকা চাকা করে কেটে নুন হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিতে হবে।

সর্ষের তেল গরম হলে তেজপাতা আর রাঁধুনি ফোড়ন দিতে হবে। তারপর লাউ দিয়ে বেশ নেড়ে চেড়ে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে মিনিট দশেক, আঁচ কিন্তু কম থাকবে। লাউ থেকে জল বেরিয়ে সিদ্ধ হবে। ১০ মিনিট পরে ঢাকা খুলে নুন দিতে হবে। আবার ৫ থেকে ৬ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে।

এইবার ঢাকা খুলে লাউয়ের সঙ্গে ভাজা উচ্ছে মেশাতে হবে। আদা বাটা দিয়ে একটু নেড়ে নুন-মিষ্টিও দিতে হবে এই সময়। খুব ভালো করে নেড়ে চেড়ে নিয়ে দুধের মধ্যে সর্ষে বাটা গুলে দিয়ে মিশিয়ে নিয়ে ১ মিনিট চাপা দিয়ে রাখতে হবে। মাখা মাখা হয়ে এলে ঘি ছড়িয়ে দিলেই রান্না শেষ।

তেতোর ডাল

কী কী লাগবে

করলা- ২

মটর ডাল- আধ কাপ

আদা বাটা- ১ চামচ

শুকনো লঙ্কা-১

কাঁচা লঙ্কা- ২

রাঁধুনি ফোড়ন- আধ চামচ

সর্ষের তেল- পরিমাণ মতো

নুন-  স্বাদ অনুযায়ী

চিনি-   স্বাদ অনুযায়ী

কীভাবে রান্না করবেন  

করলা পাতলা চাকা করে কেটে সামান্য নুন ও হলুদ দিয়ে ভেজে রাখুন। ১ কাপ মটর সামান্য লবণ আর হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।

তেল গরম করে শুকনো লঙ্কা, ১ চা চামচ রাঁধুনি ফোড়ন দিন। পরিমাণ মতো আদা বাটা ও হলুদ দিয়ে কষিয়ে এরপর সেদ্ধ ডাল দিয়ে দিন। ভাজা করলার টুকরো আর স্বাদ মতো নুন দিন। ডাল ফুটে উঠলে নামিয়ে নিন।

লাউ-উচ্ছে ডাল

কী কী লাগবে

মসুরের ডাল-আধ কাপ

মুগডাল-আধ কাপ

করলা- ২

লাউ কিউব করে কাটা- ১ কাপ

পেঁয়াজ কুঁচি- ৩ চা চামচ

হলুদ গুঁড়ো- ১ চা চামচ

কাঁচালঙ্কা- ৪

গোটা জিরে- ১ চা চামচ

নুন- স্বাদ অনুযায়ী

রসুন কুচি- ১ টেবিল চামচ

তেজপাতা- ২টি

তেল- ২ চা চামচ

ধনেপাতা- ২ চা চামচ

কীভাবে রান্না করবেন

প্রথমে দুই প্রকারের ডাল মিশিয়ে নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। অল্প জল দিয়ে লাউ ও ডাল একসঙ্গে সেদ্ধ করে নিন। অন্য একটি কড়াইয়ে মাঝারী আঁচে তেল গরম করুন। তেল গরম হয়ে আসলে এতে জিরে ও তেজপাতা দিয়ে দিন। এবার পেঁয়াজ কুচি ও রসুন কুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন। পাতলা পাতলা করে কেটে রাখা করলা দিয়ে ভালো করে ভেজে নিন। করলা ভাজা ভাজা হলে কড়াইতে সেদ্ধ করে রাখা লাউ ও ডাল একসঙ্গে দিয়ে দিন। এবার নুন, কাঁচালঙ্কা ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিন। সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন। একটু পাতলা ডাল খেতে চাইলে পরিমাণমতো জল যোগ করুন। দশ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখে নিন। ডাল মাখামাখা হয়ে এলে ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...